ঢাকা ০৮:৫০ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৭ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ডা. সাদীকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে রাজশাহীতে মানববন্ধন ভাইরাল সেই বিএনপি নেতা লিয়াকতকে দল থেকে বহিষ্কার বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামে যোগ দিতে সুইজারল্যান্ডের পথে ড. ইউনূস দায়িত্ব নিয়েই বাইডেনের ৭৮ নির্বাহী আদেশ বাতিল ট্রাম্পের সারাদেশে ৫ দিনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও নাগরিক কমিটির উপদেষ্টা হাসান আরিফ আর নেই ঋত্বিক প্রেমিদের তার স্মৃতিবিজরিত বসতভিটার অংশটুকু সংরক্ষণের দাবি বাংলাদেশে দ্রুত নির্বাচনে জোর দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ‘স্বৈরাচারের দোসরদের নয়, জুলাই বিপ্লবে সহায়তাকারী রুয়েট শিক্ষকদের মধ্য থেকে ভিসি চাই’ বিএমডিএর নতুন চেয়ারম্যান হলেন আসাদুজ্জামান

তানোরে গাছ নিলাম নিয়ে বিএমডিএর ইদুর বিড়াল খেলা

সারোয়ার হোসেন
  • আপডেট সময় : ০৫:১০:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৩ ১২০ বার পড়া হয়েছে

তানোর প্রতিনিধি:


রাজশাহীর তানোরে বিএমডিএর মরা ঝুঁকিপূর্ন ৪১ টি গাছ গোপনে নিলাম নিয়ে শতাধিক গাছ নিধনের অভিযোগ উঠেছে। এর আগেও বিএমডিএর সহকারী প্রকৌশলী কামরুজ্জামানের কারিশমায় একের পর এক গাছ নিধন হতেই আছে। উপজেলার মুন্ডুমালা পৌর এলাকার পাচন্দর কাউন্সিল মোড় থেকে প্রকাশ নগর রাস্তা( সোনামূখী হতে কালিকান্দর) ও দুবইল মোড় থেকে প্রকাশ নগর রাস্তায় ঘটেছে গাছ নিধনের ঘটনাটি। এভাবে গাছ নিধনের কারনে বিএমডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ সরেজমিনে তদন্ত করেন।

তিনি বলেন, আমি তো সব রাস্তা চিনতে পারিনি। পাচন্দর কাউন্সিল মোড় থেকে প্রকাশ নগর পর্যন্ত রাস্তায় গাছ দেখেছি। সেখানে ৪১ টি গাছ ছাড়াও অন্য আরো নয়টি গাছ আগের কাটা বলে তিনি দায় সারেন। ফলে অতিরিক্ত গাছ নিধনে বিভাগীয় তদন্তের দাবি তুলেছেন পরিবেশ বিদরা। এতে করে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন জনসাধারণ।

জানা গেছে, চলতি মাসের ১৮ অক্টোবর অতিগোপনে মরা ও ঝুঁকিপূর্ন ৪১ টি গাছ নিলাম দেয় বিএমডিএর সহকারী প্রকৌশলী কামরুজ্জামান। তিনি পছন্দের ব্যক্তি রাজশাহী কোর্ট এলাকার বকুল কে ও জিওল মোড়ের স্ব মিল মালিক রাজ্জাক কে অতি গোপনে ৪১ গাছের নিলাম দেন। কিন্তু সহকারী প্রকৌশলীর যোগসাজশে দুই রাস্তায় প্রায় শতাধিক গাছ কাটা হয়েছে। গাছ গুলো কেটে মুন্ডুমালা পৌর এলাকার আয়ড়া মোড়ে রাখা হয়। সেখান থেকে তানোর পৌর এলাকার জিওল মোড়ে রাজ্জাকের মিলে রাখা হচ্ছে।

গাছ কাটা হচ্ছে পাঁচন্দর মোড়ে আর রাখা হচ্ছে ৪/৫ কিলোমিটার দূরে। এটা নিয়ে রয়েছে নানা প্রশ্ন। কারন গাছ কাটার পর কেন এত দূরে রাখা হল? তাহলে অবশ্যই নিলামের চেয়েও বেশি গাছ কাটার কারনেই দূরে রাখছে যাতে কেউ বুঝতে না পারে।

সরেজমিনে দেখা যায়, পাঁচন্দর কাউন্সিল মোড় থেকে প্রকাশ নগরে মুল রাস্তা পর্যন্ত ৪১ টি গাছ নিলাম দিলে ৬২ টি গাছ কাটার চিহ্ন পাওয়া যায়। আবার অনেক গাছের গোড়ায় মাটি দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়েছে। যাতে করে কেউ বুঝতে না পারে। গাছগুলো কেটে জমা হচ্ছে আয়ড়া মোড়ে। সেখানে দেখা যায় শ্রমিকরা গাছগুলো গাড়িতে তুলছেন। তাজা মরা সব রকম গাছ আছে। দায়িত্বে ছিলেন দেবিপুর গ্রামের হারুন নামের এক ব্যক্তি।

তার কাছে জানতে চাওয়া এসব গাছ কোন রাস্তার তিনি জানান পাঁচন্দর কাউন্সিল মোড়ের রাস্তার ও দুবইল থেকে প্রকাশনগর গ্রামের রাস্তার গাছ। দুবইল রাস্তার গাছের কোন নিলাম হয়নি কিভাবে কাটলেন জানতে চাইলে তিনি জানান এতকিছু আমি বলতে পারবনা। বাড়তি গাছ কাটা হয়েছে আপনারদেরকে সম্মানিত করা হবে। আর এসব নিয়ে কর্তৃপক্ষকে কিছুই বলা যাবে না।

গাছ গুলো নিলাম নিয়েছেন রাজশাহীর কোর্ট এলাকার বকুল ও জিওল মোড়ের স্ব মিল মালিক রাজ্জাক এবং নিলামের কাগজও দেখান হারুন। নিলামের কাগজে দেখা যায় ১৬১৯ নম্বর স্মারকে,বরাবর, রাজশাহী কাশিয়াডাঙ্গা এলাকার মৃত জিয়ারত আলীর পুত্র বকুল মিয়া। বিষয়: মরা ও ঝুকিপূর্ণ গাছ নিলাম ও কার্যাদেশ প্রদান প্রসঙ্গে। সুত্র, বিএমডিএ/স:প্র:/তানোর/ নি,বি/২০২৩/১৬১৩। তারিখ ১৭/১০/২০২৩ উপরোক্ত বিষয় ও সুত্রের আলোকে আপনাকে জানানো যাইতেছি যে, বিএমডিএ তানোর জোনের আওতাধীন নিম্ম তালিকায় উল্লেখিত রাস্তার মরা ও ঝুকিপূর্ণ গাছ গত ১৮/১০/২০২৩ ইং তারিখে প্রকাশ্যে নিলামে বিক্রি করা হয়। বিক্রয়কৃত গাছের বিবরন নিম্মরুপ।

মুন্ডুমালা পৌরসভার সোনামূখী হতে কালিকান্দর রাস্তার অভিমুখ, ২১ টি শিশু গাছ। নিলাম বিক্রয় মূল্য এবং ৭.৫% ভ্যাট ও ১০% উৎস আয়কর পরিশোধ করায় ২১ টি শিশু গাছ আগামী তিন দিনের মধ্যে( সরকারী ছুটি) ব্যতিত নিজ খরচে কেটে নিবেন। গত ১৯ তারিখে সহকারী প্রকৌশলী কামরুজ্জামান সাক্ষর করেন।

নিলামের কার্যাদেশে কত টাকায় নিলাম হয়েছে কোন কিছুই উল্লেখ করা হয় নি। যার কারনে সরকার বঞ্চিত হয়েছেন রাজস্ব থেকে। একই কায়দায় একই রাস্তায় ২০ টি শিশু গাছের কার্যাদেশ দেয়া হয় তানোর পৌর এলাকার আমশো মথুরাপুর গ্রামের করাত কল মালিক রাজ্জাককে।

রাজশাহী বিএমডিএ অফিস জানায়, এতগুলো গাছ পত্রিকার মাধ্যমে নিলাম দিতে হবে। এভাবে নিলাম দেয়ার কোন এখতিয়ার নাই। নিলামে গাছ পাওয়া ব্যক্তি বকুল মিয়া ও রাজ্জাক বলেন, প্রকাশ্যে নিলাম নিয়ে গাছ কাটা হয়েছে। নিলাম হয়েছে সোনামূখী কালিকন্দর রাস্তার কিন্তু দুবইল রাস্তার গাছ কিভাবে কাটলেন জানতে চাইলে তারা জানান, এখন ব্যস্ত আছি পরে কথা হবে বলে দায় সারেন।

বিএমডিএর সহকারী প্রকৌশলী কামরুজ্জামানের মোবাইলে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেন নি।
বিএমডিএর নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রশিদ বলেন, তদন্ত টিম পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করার পর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


প্রসঙ্গনিউজবিডি/জে.সি

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

তানোরে গাছ নিলাম নিয়ে বিএমডিএর ইদুর বিড়াল খেলা

আপডেট সময় : ০৫:১০:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৩

তানোর প্রতিনিধি:


রাজশাহীর তানোরে বিএমডিএর মরা ঝুঁকিপূর্ন ৪১ টি গাছ গোপনে নিলাম নিয়ে শতাধিক গাছ নিধনের অভিযোগ উঠেছে। এর আগেও বিএমডিএর সহকারী প্রকৌশলী কামরুজ্জামানের কারিশমায় একের পর এক গাছ নিধন হতেই আছে। উপজেলার মুন্ডুমালা পৌর এলাকার পাচন্দর কাউন্সিল মোড় থেকে প্রকাশ নগর রাস্তা( সোনামূখী হতে কালিকান্দর) ও দুবইল মোড় থেকে প্রকাশ নগর রাস্তায় ঘটেছে গাছ নিধনের ঘটনাটি। এভাবে গাছ নিধনের কারনে বিএমডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ সরেজমিনে তদন্ত করেন।

তিনি বলেন, আমি তো সব রাস্তা চিনতে পারিনি। পাচন্দর কাউন্সিল মোড় থেকে প্রকাশ নগর পর্যন্ত রাস্তায় গাছ দেখেছি। সেখানে ৪১ টি গাছ ছাড়াও অন্য আরো নয়টি গাছ আগের কাটা বলে তিনি দায় সারেন। ফলে অতিরিক্ত গাছ নিধনে বিভাগীয় তদন্তের দাবি তুলেছেন পরিবেশ বিদরা। এতে করে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন জনসাধারণ।

জানা গেছে, চলতি মাসের ১৮ অক্টোবর অতিগোপনে মরা ও ঝুঁকিপূর্ন ৪১ টি গাছ নিলাম দেয় বিএমডিএর সহকারী প্রকৌশলী কামরুজ্জামান। তিনি পছন্দের ব্যক্তি রাজশাহী কোর্ট এলাকার বকুল কে ও জিওল মোড়ের স্ব মিল মালিক রাজ্জাক কে অতি গোপনে ৪১ গাছের নিলাম দেন। কিন্তু সহকারী প্রকৌশলীর যোগসাজশে দুই রাস্তায় প্রায় শতাধিক গাছ কাটা হয়েছে। গাছ গুলো কেটে মুন্ডুমালা পৌর এলাকার আয়ড়া মোড়ে রাখা হয়। সেখান থেকে তানোর পৌর এলাকার জিওল মোড়ে রাজ্জাকের মিলে রাখা হচ্ছে।

গাছ কাটা হচ্ছে পাঁচন্দর মোড়ে আর রাখা হচ্ছে ৪/৫ কিলোমিটার দূরে। এটা নিয়ে রয়েছে নানা প্রশ্ন। কারন গাছ কাটার পর কেন এত দূরে রাখা হল? তাহলে অবশ্যই নিলামের চেয়েও বেশি গাছ কাটার কারনেই দূরে রাখছে যাতে কেউ বুঝতে না পারে।

সরেজমিনে দেখা যায়, পাঁচন্দর কাউন্সিল মোড় থেকে প্রকাশ নগরে মুল রাস্তা পর্যন্ত ৪১ টি গাছ নিলাম দিলে ৬২ টি গাছ কাটার চিহ্ন পাওয়া যায়। আবার অনেক গাছের গোড়ায় মাটি দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়েছে। যাতে করে কেউ বুঝতে না পারে। গাছগুলো কেটে জমা হচ্ছে আয়ড়া মোড়ে। সেখানে দেখা যায় শ্রমিকরা গাছগুলো গাড়িতে তুলছেন। তাজা মরা সব রকম গাছ আছে। দায়িত্বে ছিলেন দেবিপুর গ্রামের হারুন নামের এক ব্যক্তি।

তার কাছে জানতে চাওয়া এসব গাছ কোন রাস্তার তিনি জানান পাঁচন্দর কাউন্সিল মোড়ের রাস্তার ও দুবইল থেকে প্রকাশনগর গ্রামের রাস্তার গাছ। দুবইল রাস্তার গাছের কোন নিলাম হয়নি কিভাবে কাটলেন জানতে চাইলে তিনি জানান এতকিছু আমি বলতে পারবনা। বাড়তি গাছ কাটা হয়েছে আপনারদেরকে সম্মানিত করা হবে। আর এসব নিয়ে কর্তৃপক্ষকে কিছুই বলা যাবে না।

গাছ গুলো নিলাম নিয়েছেন রাজশাহীর কোর্ট এলাকার বকুল ও জিওল মোড়ের স্ব মিল মালিক রাজ্জাক এবং নিলামের কাগজও দেখান হারুন। নিলামের কাগজে দেখা যায় ১৬১৯ নম্বর স্মারকে,বরাবর, রাজশাহী কাশিয়াডাঙ্গা এলাকার মৃত জিয়ারত আলীর পুত্র বকুল মিয়া। বিষয়: মরা ও ঝুকিপূর্ণ গাছ নিলাম ও কার্যাদেশ প্রদান প্রসঙ্গে। সুত্র, বিএমডিএ/স:প্র:/তানোর/ নি,বি/২০২৩/১৬১৩। তারিখ ১৭/১০/২০২৩ উপরোক্ত বিষয় ও সুত্রের আলোকে আপনাকে জানানো যাইতেছি যে, বিএমডিএ তানোর জোনের আওতাধীন নিম্ম তালিকায় উল্লেখিত রাস্তার মরা ও ঝুকিপূর্ণ গাছ গত ১৮/১০/২০২৩ ইং তারিখে প্রকাশ্যে নিলামে বিক্রি করা হয়। বিক্রয়কৃত গাছের বিবরন নিম্মরুপ।

মুন্ডুমালা পৌরসভার সোনামূখী হতে কালিকান্দর রাস্তার অভিমুখ, ২১ টি শিশু গাছ। নিলাম বিক্রয় মূল্য এবং ৭.৫% ভ্যাট ও ১০% উৎস আয়কর পরিশোধ করায় ২১ টি শিশু গাছ আগামী তিন দিনের মধ্যে( সরকারী ছুটি) ব্যতিত নিজ খরচে কেটে নিবেন। গত ১৯ তারিখে সহকারী প্রকৌশলী কামরুজ্জামান সাক্ষর করেন।

নিলামের কার্যাদেশে কত টাকায় নিলাম হয়েছে কোন কিছুই উল্লেখ করা হয় নি। যার কারনে সরকার বঞ্চিত হয়েছেন রাজস্ব থেকে। একই কায়দায় একই রাস্তায় ২০ টি শিশু গাছের কার্যাদেশ দেয়া হয় তানোর পৌর এলাকার আমশো মথুরাপুর গ্রামের করাত কল মালিক রাজ্জাককে।

রাজশাহী বিএমডিএ অফিস জানায়, এতগুলো গাছ পত্রিকার মাধ্যমে নিলাম দিতে হবে। এভাবে নিলাম দেয়ার কোন এখতিয়ার নাই। নিলামে গাছ পাওয়া ব্যক্তি বকুল মিয়া ও রাজ্জাক বলেন, প্রকাশ্যে নিলাম নিয়ে গাছ কাটা হয়েছে। নিলাম হয়েছে সোনামূখী কালিকন্দর রাস্তার কিন্তু দুবইল রাস্তার গাছ কিভাবে কাটলেন জানতে চাইলে তারা জানান, এখন ব্যস্ত আছি পরে কথা হবে বলে দায় সারেন।

বিএমডিএর সহকারী প্রকৌশলী কামরুজ্জামানের মোবাইলে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেন নি।
বিএমডিএর নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রশিদ বলেন, তদন্ত টিম পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করার পর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


প্রসঙ্গনিউজবিডি/জে.সি