ঢাকা ০৯:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৭ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ডা. সাদীকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে রাজশাহীতে মানববন্ধন ভাইরাল সেই বিএনপি নেতা লিয়াকতকে দল থেকে বহিষ্কার বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামে যোগ দিতে সুইজারল্যান্ডের পথে ড. ইউনূস দায়িত্ব নিয়েই বাইডেনের ৭৮ নির্বাহী আদেশ বাতিল ট্রাম্পের সারাদেশে ৫ দিনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও নাগরিক কমিটির উপদেষ্টা হাসান আরিফ আর নেই ঋত্বিক প্রেমিদের তার স্মৃতিবিজরিত বসতভিটার অংশটুকু সংরক্ষণের দাবি বাংলাদেশে দ্রুত নির্বাচনে জোর দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ‘স্বৈরাচারের দোসরদের নয়, জুলাই বিপ্লবে সহায়তাকারী রুয়েট শিক্ষকদের মধ্য থেকে ভিসি চাই’ বিএমডিএর নতুন চেয়ারম্যান হলেন আসাদুজ্জামান

আপত্তিকর ভিডিও ছড়ানোর ভয় দেখিয়ে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০২:৩৮:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ জানুয়ারী ২০২৫ ৬৮ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক:


আপত্তিকর ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে কলেজছাত্রীকে দিনের পর দিন ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে এক যুবলীগকর্মীর বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী ছাত্রী রাজশাহীর একটি সরকারি কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের অধ্যায়নরত। বুধবার দুপুরে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ অভিযোগ করেছেন।

অভিযুক্ত যুবলীগকর্মীর নাম হিটলার মাহমুদ (৩৬)। সে বাগমারা উপজেলার হাসনিপুর গ্রামের বাসিন্দা। বাগমারা আসনের সাবেক এমপির ক্যাডার হিসেবে পরিচিত। এতদিন হিটলারের বিরুদ্ধে কোন আইনি পদক্ষেপ নিতে পারেননি ওই ছাত্রী। আওয়ামী সরকারের পতনের পর গত ২৮ নভেম্বর তিনি হিটলারের বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করেছেন।

ওই ছাত্রীর দাবি, আওয়ামী লীগের সাবেক এমপির প্রভাবের কারণে তিনি আগে বিচার পাননি। হিটলার যুবলীগকর্মী হলেও তার মামা ও চাচা বিএনপির নেতা। এখন মামলা করলেও তিনি সুবিচার পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় আছেন। তারা নানাভাবে হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন।

তিনি বলেন, ‘মামলা করার পরেও এ পর্যন্ত কোন তদন্ত কর্মকর্তার আমার সঙ্গে কথা বলেনি। এভিডেন্স চাননি। আমি আওয়ামী লীগের আমলে বিচার পাইনি। এখনও কি বিচার পাব না ? বলে প্রশ্ন করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে ওই কলেজছাত্রী জানান, ২০২০ সালের মে মাসে হিটলার তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এরপর বাগমারার ভবানীগঞ্জ তক্তপাড়ায় তার এক বোনের বাসায় এবং রাজশাহী নগরের লক্ষ্মীপুর ঝাউতলা মোড়ের এক বাসায় নিয়ে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শারীরিক মেলামেশা করেন। কিন্তু বিয়ের জন্য চাপ দিলে তিনি প্রতিবারই এড়িয়ে যেতেন।

তাই ওই ছাত্রী বিয়ের দাবিতে একবার হিটলারের বাড়িতে গিয়ে ওঠেন। কিন্তু তার বাবা এই বলে তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেন যে, কিছুদিনের মধ্যে তাকে বিয়ে দিয়ে আনা হবে। এভাবে বিয়ে করালে তাদের সম্মান ক্ষুন্ন হবে। কিন্তু পরবর্তীতে বিয়ের আয়োজন করা হয়নি।

ওই ছাত্রী জানান, প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে তিনি হিটলারকে এড়িয়ে যেতে শুরু করেন। তখন হিটলার তাকে গোপনে ধারণ করা কিছু আপত্তিকর ছবি এবং ভিডিও পাঠান। তার কথামত না চললে এগুলো ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখান। ফলে তিনি সম্পর্ক চালিয়ে যেতে বাধ্য হন। ওই ভিডিও ছড়ানোর ভয় দেখিয়ে হিটলার দিনের পর দিন ধর্ষণ করেন বলে তার অভিযোগ।

তিনি জানান, হিটলারের বিরুদ্ধে মামলা করতে তিনি গত ২০ নভেম্বর বাগমারা থানায় যান। সেদিন ওসি তৌহিদুল ইসলাম শুধু একটি অভিযোগ নিয়ে রাখেন। এক লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে তিনি মামলা রেকর্ড করেন নি। পরে ২৮ নভেম্বর তিনি আদালতে গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে মামলার আবেদন করেন। এছাড়া বিভিন্ন সময় হুমকি দেওয়ার অভিযোগে আরেকটি মামলা করেন তিনি।

ওই ছাত্রী বলেন, ‘মামলা করার পর পর আমি জেনেছি হিটলার ইতোমধ্যে তিনটি বিয়ে করেছে। প্রথম স্ত্রীর নাম রিতা। তারপর রাজিয়া সুলতানা ইভা নামের এক মেয়ের সঙ্গে চার বছর প্রেম করে বিয়ে করে। পরে তালাক হয়ে যায়। বর্তমানে মিতু নামের আরেক মেয়ের সঙ্গে হিটলারের প্রেমের সম্পর্ক আছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নারী শিক্ষকের সঙ্গেও তার প্রেমের সম্পর্ক আছে। নারীলোভী হিটলার মেয়েদের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে টাকা-পয়সাও হাতিয়ে নেয়।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে যুবলীগকর্মী হিটলার মাহমুদ বলেন, প্রেম হতেই পারে। কিন্তু ওই মেয়ে ভাল না। বিয়ে করতে চাইলে বিয়ে করে না। ১০ লাখ, ২০ লাখ টাকা চায়। সে যেসব অভিযোগ এনেছে সেগুলো সত্য নয়। সে মামলা করেছে সেটা আমরা আইনগতভাবেই মোকাবিলা করব।


প্রসঙ্গনিউজ২৪/জে.সি

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

আপত্তিকর ভিডিও ছড়ানোর ভয় দেখিয়ে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ

আপডেট সময় : ০২:৩৮:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ জানুয়ারী ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক:


আপত্তিকর ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে কলেজছাত্রীকে দিনের পর দিন ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে এক যুবলীগকর্মীর বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী ছাত্রী রাজশাহীর একটি সরকারি কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের অধ্যায়নরত। বুধবার দুপুরে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ অভিযোগ করেছেন।

অভিযুক্ত যুবলীগকর্মীর নাম হিটলার মাহমুদ (৩৬)। সে বাগমারা উপজেলার হাসনিপুর গ্রামের বাসিন্দা। বাগমারা আসনের সাবেক এমপির ক্যাডার হিসেবে পরিচিত। এতদিন হিটলারের বিরুদ্ধে কোন আইনি পদক্ষেপ নিতে পারেননি ওই ছাত্রী। আওয়ামী সরকারের পতনের পর গত ২৮ নভেম্বর তিনি হিটলারের বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করেছেন।

ওই ছাত্রীর দাবি, আওয়ামী লীগের সাবেক এমপির প্রভাবের কারণে তিনি আগে বিচার পাননি। হিটলার যুবলীগকর্মী হলেও তার মামা ও চাচা বিএনপির নেতা। এখন মামলা করলেও তিনি সুবিচার পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় আছেন। তারা নানাভাবে হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন।

তিনি বলেন, ‘মামলা করার পরেও এ পর্যন্ত কোন তদন্ত কর্মকর্তার আমার সঙ্গে কথা বলেনি। এভিডেন্স চাননি। আমি আওয়ামী লীগের আমলে বিচার পাইনি। এখনও কি বিচার পাব না ? বলে প্রশ্ন করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে ওই কলেজছাত্রী জানান, ২০২০ সালের মে মাসে হিটলার তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এরপর বাগমারার ভবানীগঞ্জ তক্তপাড়ায় তার এক বোনের বাসায় এবং রাজশাহী নগরের লক্ষ্মীপুর ঝাউতলা মোড়ের এক বাসায় নিয়ে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শারীরিক মেলামেশা করেন। কিন্তু বিয়ের জন্য চাপ দিলে তিনি প্রতিবারই এড়িয়ে যেতেন।

তাই ওই ছাত্রী বিয়ের দাবিতে একবার হিটলারের বাড়িতে গিয়ে ওঠেন। কিন্তু তার বাবা এই বলে তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেন যে, কিছুদিনের মধ্যে তাকে বিয়ে দিয়ে আনা হবে। এভাবে বিয়ে করালে তাদের সম্মান ক্ষুন্ন হবে। কিন্তু পরবর্তীতে বিয়ের আয়োজন করা হয়নি।

ওই ছাত্রী জানান, প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে তিনি হিটলারকে এড়িয়ে যেতে শুরু করেন। তখন হিটলার তাকে গোপনে ধারণ করা কিছু আপত্তিকর ছবি এবং ভিডিও পাঠান। তার কথামত না চললে এগুলো ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখান। ফলে তিনি সম্পর্ক চালিয়ে যেতে বাধ্য হন। ওই ভিডিও ছড়ানোর ভয় দেখিয়ে হিটলার দিনের পর দিন ধর্ষণ করেন বলে তার অভিযোগ।

তিনি জানান, হিটলারের বিরুদ্ধে মামলা করতে তিনি গত ২০ নভেম্বর বাগমারা থানায় যান। সেদিন ওসি তৌহিদুল ইসলাম শুধু একটি অভিযোগ নিয়ে রাখেন। এক লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে তিনি মামলা রেকর্ড করেন নি। পরে ২৮ নভেম্বর তিনি আদালতে গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে মামলার আবেদন করেন। এছাড়া বিভিন্ন সময় হুমকি দেওয়ার অভিযোগে আরেকটি মামলা করেন তিনি।

ওই ছাত্রী বলেন, ‘মামলা করার পর পর আমি জেনেছি হিটলার ইতোমধ্যে তিনটি বিয়ে করেছে। প্রথম স্ত্রীর নাম রিতা। তারপর রাজিয়া সুলতানা ইভা নামের এক মেয়ের সঙ্গে চার বছর প্রেম করে বিয়ে করে। পরে তালাক হয়ে যায়। বর্তমানে মিতু নামের আরেক মেয়ের সঙ্গে হিটলারের প্রেমের সম্পর্ক আছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নারী শিক্ষকের সঙ্গেও তার প্রেমের সম্পর্ক আছে। নারীলোভী হিটলার মেয়েদের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে টাকা-পয়সাও হাতিয়ে নেয়।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে যুবলীগকর্মী হিটলার মাহমুদ বলেন, প্রেম হতেই পারে। কিন্তু ওই মেয়ে ভাল না। বিয়ে করতে চাইলে বিয়ে করে না। ১০ লাখ, ২০ লাখ টাকা চায়। সে যেসব অভিযোগ এনেছে সেগুলো সত্য নয়। সে মামলা করেছে সেটা আমরা আইনগতভাবেই মোকাবিলা করব।


প্রসঙ্গনিউজ২৪/জে.সি