সুপেয় পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে সভা
- আপডেট সময় : ০৪:০৯:৪১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ মার্চ ২০২৪ ৭৩ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক:
সুপেয় পানি ব্যবস্থাপনাকে অন্তর্ভূক্তিমূলক, অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিনিধিত্বমূলক করতে প্রয়োজন সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা, কার্যকরী বাস্তবায়ন কৌশল এবং যথাযথ সমন্বয়
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ৬ অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে, নিরাপদ ও স্বল্পমূল্যের খাবার পানিতে সকলের সর্বজনীন ও সমতাভিত্তিক প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন খাতে শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সুপেয় পানি ব্যবস্থাপনাকে একটি অন্তর্ভূক্তিমূলক, অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিনিধিত্বমূলক করতে হবে, যা সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে বিভিন্ন লক্ষ্যমাত্রার অগ্রগতির পক্ষে জনমত গড়ে তুলতে সহায়তা করবে এবং কাংখিত ফলাফলকে প্রতিফলিত করবে।
এই লক্ষ্য অর্জনে ওয়েভ ফাউন্ডেশন জানুয়ারি ২০২৪ থেকে পানি, পয়ঃনিষ্কাশন এবং স্বাস্থ্যবিধি এর ঝুঁকি মোকাবেলায় পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন খাতে জবাবদিহিতা বৃদ্ধির জন্য সহায়তা শীর্ষক প্রকল্পটি রাজশাহী ও খুলনা সিটি কর্পোরেশনে বাস্তবায়ন করছে। এই প্রকল্পের অধীনে রাজশাহী ও খুলনা সিটি কর্পোরেশন এলাকায় একটি সমীক্ষা পরিচালনার অংশ হিসেবে আজ ১০ মার্চ ২০২৪, হোটেল ওয়ারিশান রাজশাহীতে আয়োজিত The Annotated Water Integrity Scan (AWIS) Tools শীর্ষক এক কর্মশালা আয়োজন করা হয়।
বিশুদ্ধ পানি সব ধরনের মানবাধিকারের ভিত্তি হিসেবে স্বীকৃত। জাতিসংঘ পানি অধিকারকে মানবাধিকার হিসেবে ঘোষণা করেছে। কিন্তু অধিকার হিসেবে স্বীকৃত হলেও এখনো এ অধিকার থেকে বঞ্চিত বিশ্বের ৭৬ কোটিরও বেশি মানুষ। দেশের ৪১% মানুষ এখনো নিরাপদ পানি সুবিধা থেকে বঞ্চিত। দুর্যোগপ্রবণ এলাকা হিসেবে খুলনা জেলাতে লবনাক্ত পানির কারণে বসবাসরত জনগণ সুপেয় পানি সুযোগ-সুবিধা হতে বঞ্চিত। রাজশাহী শহরে ওয়াসার সরবরাহ করা পানিতে অতিমাত্রায় আয়রণ থাকে এবং বরেন্দ্র অঞ্চলে পানির স্তর গভীরে হওয়াতে সুপেয় পানির অভাব রয়েছে। এ সকল কারণে প্রকল্পটি দুইটি সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বাস্তবায়িত হবে। পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থাপনার জন্য সুশাসন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই সুপেয় পানি নিশ্চিত করতে বরাদ্দেও সমতা আনতে হবে। এসডিজি লক্ষ্য ৬ অনুসারে ২০৩০ সালের মধ্যে শতভাগ মানুষের কাছে নিরাপদ পানি পৌঁছে দিতে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জসমূহ দূরীকরণে নিরাপদ পানির জন্য কমপক্ষে চার গুণ সক্ষমতা বাড়াতে হবে। প্রত্যেক মানুষের কাছে নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন পৌঁছাতে সরকার অনেক নীতি ও পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করছে। এখনও পানি পরিষেবা ও ব্যবস্থাপনায় জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতার অনেক ঘাটতি রয়েছে। তাই সকলের জন্য মানসম্মত সুপেয় পানি নিশ্চিতকরণে বিদ্যমান সমস্যা চিহ্নিতকরণ এবং উত্তরণে প্রয়োজন সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা, কার্যকরী বাস্তবায়ন কৌশল এবং যথাযথ সমন্বয় দরকার বলে এই কর্মশালায় বক্তারা মতামত তুলে ধরেন।
কর্মশালার শুরুতে আয়োজকের পক্ষে স্বাগত বক্তব্য এবং ওয়েভ ফাউন্ডেশনের পরিচিতি তুলে ধরেন সংস্থার উপ-পরিচালক কানিজ ফাতেমা। প্রকল্প সম্পর্কে উপস্থাপনা করেন ওয়েভ ফাউন্ডেশনের প্রকল্প সমন্বয়কারী লিপি আমেনা। কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বরেন্দ্র উন্নয়ন প্রচেষ্টা (বিউপি) এর নির্বাহী পরিচালক জনাব ফয়জুল্লাহ চৌধুরী, আকবারুল হাসান মিল্লাত, সম্পাদক, দৈনিক সোনার দেশ, সেলিম রেজা রঞ্জু, উপ-প্রধান পরিছন্ন কর্মকর্তা, বনি আহসান, নগর পরিকল্পনাবিদ, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন, মোঃ সিরাজুল ইসলাম প্রকৌশলী, জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল কার্যালয়, রাজশাহী, মোঃ আব্দুল মমিন, শহর সমাজসেবা কর্মকর্তা, জাহাঙ্গীর আলম খান, পরিচালক, ডাসকো এবং মিডিয়া, স্থানীয় লোকমোর্চার সদস্য এ্বং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ। দিনব্যাপি কর্মশালাটি পরিচালনা করেন গবেষক ড. হাসান আলী, বিপ্লব ব্যানার্জি।
সরকারের ভিশন ২০২১ ও ২০৪১ জাতীয় পরিকল্পনার রূপকল্পের লক্ষ্য পূরণে প্রকল্পটি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ইতিবাচক প্রভাব রাখতে কাজ করবে। এছাড়া এ প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে পানি ব্যবস্থাপনায় জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিকরণ; লক্ষিত জনগোষ্ঠীর জন্য পানি অধিকার নিশ্চিতকরণ; ন্যায়সঙ্গত পানি ব্যবস্থাপনা কার্যকরে সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ; অধিকারভিত্তিক পদ্ধতির মাধ্যমে জনসাধারণ, জনপ্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের জবাবদিহিতা আনায়ন; জবাবদিহিতা তৈরিতে নাগরিক এবং সুশীল সমাজকে শত্তিশালী ভূমিকা পালনে সক্ষম করবে; পানিখাতে স্বচ্ছতা আনায়নে সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারক, অংশীজন, ওয়াশ ব্যবহারকারী গ্রুপ, যুব, সিএসও’র সাথে ওয়াশ সম্পর্কিত নীতি সংস্কারে উদ্যোগ গ্রহণ করবে যা পলিসি অ্যাডভোকেসির মাধ্যমে পানিখাতে প্রয়োজনীয় নীতি সংস্কারের সুশীল সমাজকে শক্তিশালী করবে এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠির মত প্রকাশের সুযোগ বৃদ্ধি করবে।
প্রসঙ্গনিউজ২৪/জে.সি