রাজশাহী সেনানিবাসে বাংলাদেশ ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টের তৃতীয় কোর পুনর্মিলনীতে প্রধানমন্ত্রী
- আপডেট সময় : ০৪:৪৮:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ মার্চ ২০২৪ ১৬৬ বার পড়া হয়েছে
নিউজ ডেস্ক:
আওয়ামী লীগ সরকার একটি উন্নত ও পেশাদার সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলার জন্য বদ্ধপরিকর উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়ন, একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ সার্বিক দক্ষতা ও সামর্থ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে যুগোপযোগী উন্নত প্রযুক্তি, আধুনিক যুদ্ধ সরঞ্জামাদি সরবরাহ, প্রশিক্ষণ প্রদান ও উন্নত প্রশিক্ষণসামগ্রী সরবরাহ, প্রয়োজনীয় স্থাপনা নির্মাণসহ সময়োচিত সকল পদক্ষেপ গ্রহণে আমাদের সরকার সদা সচেষ্ট।’ এ সময় অবসরপ্রাপ্ত ও চাকরিরত সর্বস্তরের সদস্যদের মধ্যে সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্ববোধ আরও সুদৃঢ় করবে এ প্রত্যাশা করেন তিনি।
শনিবার (২ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজশাহী সেনানিবাসে বাংলাদেশ ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টের তৃতীয় কোর পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ জাতীয় চার নেতা এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদ ও ২ লাখ নির্যাতিত মা-বোনকে।
প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে প্যারা কমান্ডো ব্রিগেড গঠন করা হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেনাবাহিনীতে উল্লেখযোগ্য-সংখ্যক নতুন পদাতিক ডিভিশন, ব্রিগেড, ইউনিট ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এ ছাড়া রিক্রুট প্রশিক্ষণকে আরও আধুনিকায়ন ও যুগোপযোগী করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমাদের সরকার সব সময় সেনাবাহিনীর সদস্যদের সার্বিক দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ সুবিধাদির উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের ওপর গুরুত্ব প্রদান করে যাচ্ছে। ক্যাডেটদের মৌলিক প্রশিক্ষণ ও প্রাতিষ্ঠানিক মানোন্নয়নের লক্ষ্যে প্রশিক্ষণের মেয়াদকাল বৃদ্ধি করা হয়েছে, যেখানে ক্যাডেটগণ বিভিন্ন বিষয়ে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করার সুযোগ লাভ করেছে। রিক্রুটদের উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য বিভিন্ন ফরমেশনে প্রশিক্ষণ সুবিধাদি সম্প্রসারণ করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে প্যারা কমান্ডো ব্রিগেড গঠন করা হয়েছে। দেশের আকাশ প্রতিরক্ষাকে আরও সুসংহত করতে সংযোজিত হয়েছে এমএলআরএস এবং মিসাইল রেজিমেন্ট। বর্তমান সরকার সেনাবাহিনীতে অত্যাধুনিক বিভিন্ন যুদ্ধাস্ত্র, হেলিকপ্টার, আর্টিলারি গান ও মডার্ন ইনফ্যান্ট্রি গেজেট সংযোজন করে সেনাবাহিনীর অপারেশনাল সক্ষমতাকে বহুলাংশে বৃদ্ধি করেছে।
বর্তমান সরকারের সময় সেনাসদস্যদের জন্য নানা কল্যাণমুখী পদক্ষেপের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, ইতঃপূর্বে সেনাসদস্যদের রসদ বাড়ানোসহ তাদের বিভিন্ন ভাতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এ ছাড়াও জেসিওদের প্রথম শ্রেণি এবং সার্জেন্টদের দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তার মর্যাদায় উন্নীত করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর সকল স্তরের সেনাসদস্যদের আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। বিভিন্ন সেনানিবাসে জেসিও ও অন্যান্য পদবির সৈনিকদের বসবাসের জন্য বহুতল ভবন ও অত্যাধুনিক এসএম ব্যারাক নির্মাণ করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত সদস্যদের চিকিৎসাসেবার মান উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন সিএমএইচের জনবলসহ অন্যান্য সকল সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করেছি। মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ছাড়াও আমরা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন প্রতিষ্ঠা করেছি। সেনাবাহিনীর কল্যাণমুখী কার্যক্রমের পরিধি বৃদ্ধির লক্ষ্যে ট্রাস্ট ব্যাংকসহ বিভিন্ন স্থাপনা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর জেসিও ও অন্যান্য পদবির সদস্যদের জন্য ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেম চালু করা হয়েছে।’
এ সময় তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সব সময়ই জাতি গঠনমূলক কর্মকাণ্ডে নিজেদের নিয়োজিত করেছে। পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজ তদারকি, কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়ক প্রকল্প, হাতিরঝিল সমন্বিত প্রকল্প, বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার নির্মাণ, মহিপাল ফ্লাইওভার নির্মাণ, থানচি-আলীকদম সড়ক নির্মাণ ইত্যাদি জাতীয় কার্যক্রমে আপনাদের অবদান অনস্বীকার্য।
বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং বিভিন্ন বৈদেশিক মিশনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের আত্মত্যাগ, কর্তব্যনিষ্ঠা ও পেশাদারত্বের মাধ্যমে বাংলাদেশের জন্য বয়ে এনেছে সম্মান ও মর্যাদা। যা বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে অত্যন্ত উজ্জ্বল করেছে। সম্প্রতি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনাসদস্যরা নিরলসভাবে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে দেশের গণতান্ত্রিক ধারা সমুন্নত রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
প্রসঙ্গনিউজ২৪/জে.সি