তানোরে কিশোর গ্যাংয়ের গড ফাদার মাহফুজের দখল বাজী চরমে!
- আপডেট সময় : ০৪:৫৪:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ জুলাই ২০২৩ ১০২ বার পড়া হয়েছে
তানোর প্রতিনিধি:
রাজশাহীর তানোরে উড়তি বয়সের কিশোরদের নিয়ে বিভিন্ন জমি বাড়ি দখল ও গ্যাং তৈরি করছেন মাহফুজ নামের এক ভূমিগ্রাসী তরুণ যুবক বলে একাধিক সুত্র থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে। সে গত শনিবার উপজেলার ইলামদহী পাকুয়া হাটে পৌর সদর থেকে ভাড়াটিয়া কয়েকশো কিশোর নিয়ে যান । তার আগের দিন শুক্রবার কিশোরদের নিয়ে মোটরসাইকেল ও দেশীয় অস্ত্রে মহড়া দিয়ে আসেন। পরদিন জমি দখলে গেলে পূর্বের মালিকরা কিশোর গ্যাংদের উত্তম মাধ্যম দিলে পালিয়ে আসতে বাধ্য হন। এঘটনায় এলাকায় ব্যাপক আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। সেই সাথে গ্যাং গড ফাদার মাহফুজকে গ্রেফতারের দাবি তুলেছেন সচেতন মহল।
এর আগে পৌর সদর হিন্দুপাড়াগ্রামের মৃত স্বপনের বাড়ি দখলের জন্য মিটার ভাংচুর ও মহিলাদের গালমন্দ করে বাড়ি ছাড়ার হুমকি দেন। এঘটনায় মৃত স্বপনের স্ত্রী শ্রীমতি মিরা দাস বাদি হয়ে গড ফাদার মাহফুজকে আসামী করে থানায় অভিযোগ দেন। কিন্তু অভিযোগ দিলেও রহস্য জনক কারনে থানা পুলিশ কোন ব্যবস্থা নেয়নি। যার কারনে মাহফুজ দিনের দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।
কে এই মাহফুজ বাড়ি পৌর এলাকার ধানতৈড় গ্রামের জালাল উদ্দিনের ছেলে। মাহফুজের তার পিতার সাতে তেমন একটা সম্পর্ক নাই। বিগত প্রায় পাঁচ বছর আগে মাহফুজ রাজশাহী শহরে গিয়ে তার ওই সময়ের বন্ধ সারোয়ারকে হোটেলে রেখে তার ব্যবহিত পাকিস্তানি সিজি ১২৫ সিসি মোটরসাইকেল বিক্রি করে দোলোদিয়া চলে যান। দশ বারো দিন পর সেখান থেকে এসে বেপরোয়া হয়ে যান। বিগত প্রায় তিন বছর আগে আলুতে কয়েক কোটি টাকা পেয়ে উড়তে শুরু করেন মাহফুজ। জমি সমস্যা যেখানেই সেই জমি কিনে পৌর সদর থেকে কিশোরদের ৫০০-১০০০ টাকা করে দিয়ে ভাড়া করে দখল বাজি করেন। এভাবেই একের পর এক দখল বাজি করে কিশোর গ্যাং তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন মাহফুজ।
জানা গেছে, বিগত প্রায় তিন বছর আগে মাহফুজকে তেমন ভাগে লোকজন চিনত না। পাড়ার লোকজন ছাড়া কেউ তাকে ভালো ভাবে জানত না এবং পাড়ার লোকজনদের সাথে তেমন সম্পর্কও ছিল না। কিন্তু গত ২০২১ সালের দিকে আলুতে কয়েক কোটি টাকা লাভ পেয়ে পৌর সদর ও বিভিন্ন স্থানে জমি কিনে লাঠিয়াল বাহিনীদের দিয়ে রাখেন। এভাবে করতে করতে সে সদরে কয়েকগ্রামের কিশোরদের নিয়ে গ্যাং তৈরি করেন।সচেতন মহলের দাবি, চলতি বছরে পৌর সদর হিন্দুপাড়াগ্রামে শত বছর ধরে ব্যবহিত জায়গা দেশীয় অস্ত্র ও কিশোর গ্যাংদের মাধ্যমে গাছপালা কেটে দখলের চেষ্টা করেন।
উপজেলায় যেখানেই জমির একটু ভেজাল দাম কম হলেই সেখানে মাহফুজ কিনে গ্যাং দ্বারা দখল করেন। সে এত সাহস পেয়েছে পৌর সদরের কিছু ব্যক্তির জন্য। যাদেরকে টাকা দিলেই সব হয়ে যায়। যারা টাকার জন্য সবকিছু করতে পারে। গত শনিবারে ৫০০-১০০০ টাকা করে দিব বলে নিয়ে গিয়ে টাকা দেয়নি মাহফুজ। এজন্য কিছু কিশোর গ্যাং সদস্যরা লাঠি হাতি তাকে খোজাখুজি করছিল। এমনকি জমি দখলের আগে মাথা হ্যাং করা নেশা জাতীয় ওষুধ সেবন করে নিয়ে যায়। তাকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা না হলে পুরো তানোর কিশোর গ্যাংয়ে ভরে যাবে।
ইলামদহী গ্রামের হাজী ইসরাইল, খাদেমুল, মুনসুর, সুফিয়ানসহ অনেকে জানান, বিগত প্রায় ১০০ বছর ধরে জমিগুলো আমাদের এলাকার লোকজন চাষাবাদ করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। কিন্তু হঠাৎ গত শুক্রবার মোটরসাইকেল নিয়ে কিছু কিশোরেরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেয়। পরদিন শনিবার কিশোরদের এনে চাষ করা জমি দখলের চেষ্টা করলে এলাকার লোকজন ধাওয়া দিলে পালিয়ে যায়।
সবচেয়ে অবাক করার বিষয় বেশির ভাগ কিশোর ও উড়তি বয়সের, তারা কেন দখল বাজিতে আসবে। তাদের তো এখন জীবন গড়ার সময়। মাহফুজ নামের যে বেয়াদব নিয়ে এসেছে তাকে দ্রুত আটক করা হোক। নচেৎ এসব কিশোরেরা ভয়ংকর হয়ে উঠবে।
কিশোর গ্যাংয়ের গড ফাদার মাহফুজ জানান, আমি কোন জমি দখল করতে যায়নি। আপনি কিশোরদের নিয়ে গিয়েছিলেন তারা টাকার জন্য খুঁজছিল প্রশ্ন করা হলে মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন তিনি।
থানার ওসি কামরুজ্জামান মিয়া বলেন, কিশোরদের নিয়ে গ্যাং তৈরির কোন সুযোগ নেই। কিশোরেরা আগামীর ভবিষৎ, যারা তাদেরকে অন্যায় কাজে বা তাদেরকে নিয়ে গ্যাং তৈরি করবে কোন ছাড় দেয়া হবে না।
প্রসঙ্গনিউজবিডি/জে.সি