ঢাকা ০১:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বাংলাদেশে দ্রুত নির্বাচনে জোর দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ‘স্বৈরাচারের দোসরদের নয়, জুলাই বিপ্লবে সহায়তাকারী রুয়েট শিক্ষকদের মধ্য থেকে ভিসি চাই’ বিএমডিএর নতুন চেয়ারম্যান হলেন আসাদুজ্জামান রাবিতে সাংবাদিক মাহমুদুর রহমানের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজয় ২৪ উদযাপন উপলক্ষে গরু খাসি নিয়ে বিজয় মিছিল করেছে জিয়া হলের শিক্ষার্থীরা রাবি গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে তালা ; ৪দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি রামেক হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গৃহবধুর মৃত্যু দুই বছরের মধ্যে বিলীন হবে ইসরায়েলের অস্তিত্ব : ট্রাম্প ঢাবি নিয়ে হাসনাত আব্দুল্লাহর ১৪ প্রস্তাব ইসলামী ছাত্রশিবির রাজশাহী অঞ্চল পশ্চিমের সাথী সমাবেশ অনুষ্ঠিত 

শিক্ষকের প্রতি ছবি আঁকার চ্যালেঞ্জ ছুঁড়লেন রাবি চারুকলার শিক্ষার্থীরা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৫:২৫:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ অক্টোবর ২০২৪ ৩৯ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক:


রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) চারুকলা অনুষদের চিত্রকলা, প্রাচ্যকলা ও ছাপচিত্র বিভাগের শিক্ষক ড. সুজন সেনের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেছেন, ‘আমি আজকে চ্যালেঞ্জ করলাম, চারুকলার যে কোন একজন শিক্ষার্থী দাঁড়াবে, অন্যদিকে সুজন সেন দাঁড়াবে, যদি সুজন সেন তার থেকে ভালো ছবি আঁকতে পারে তাহলে আমরা সকল প্রকার আন্দোলন প্রত্যাহার করব এবং তাকে আগের মতো ক্লাসে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করব।’

রবিবার দুপুওে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে ড. সুজন সেনের অপকর্মের নিরপেক্ষ তদন্ত ও অপসারণের দাবিতে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন ওই ছাত্র। ড. সুজন সেনকে অযোগ্য, স্বৈরাচার, দূর্নীতিবাজ, দালাল ও চাটুকার আখ্যা দিয়ে বিভাগের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।

মানববন্ধনে ড. সুজন সেনকে চ্যালেঞ্জ করা আবু রায়হান নামের এই শিক্ষার্থী আরও বলেন, ড. সুজন সেনের বিভিন্ন অনিয়মের প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। আমরা তদন্ত কমিটিকে নিরপেক্ষ তদন্ত করার আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা প্রশাসনকে বলে দিতে চাই, আপনাদের এ তদন্ত যদি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে হয়, তাহলে এটা কোনভাবেই আমরা মেনে নেব না। আমরা আরও দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবো।

মানববন্ধনে বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সরোয়ার জাহান বলেন, আমরা আজকে একটা অযোগ্য শিক্ষকের বিরুদ্ধে এখানে দাঁড়িয়েছি। আমি গত পাঁচ বছরে তাকে ক্লাসের কোনো কাজ শিখিয়ে দিতে দেখিনি। আমাদের বেশিরভাগ কাজ ব্যবহারিক। কিন্তু আমরা তাকে ব্যবহারিক কাজে কখনও দেখিনি। যারা সুজন সেনের পক্ষে দালালি করছে আমরা তাদের হুশিয়ার করে বলে দিচ্ছি, অযোগ্য কারোর পক্ষে দালালি করবেন না। এর ফল ভালো হবে না। আমরা শিক্ষার্থীরা এর সমুচিত জবাব দেবো। শিক্ষার্থীরা আপনাদের প্রতিপক্ষ না। আমি চাই প্রশাসন স্বচ্ছতার সাথে একটি সুন্দর তদন্ত করুক। তবে সুজন সেনের যতদিন পর্যন্ত চাকরিচ্যুতি না হচ্ছে, আমরা এই রাজপথ ছাড়বো না।

চতুর্থ বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী আসিফা পারভিন পুঁথি বলেন, চারুকলার শিক্ষক হওয়া সত্বেও সুজন সেন কখনো আমাদের পেজগুলিতে একটি পেন্সিলের দাগও দিয়ে দেখায়নি। এখানেই তার যোগ্যতা আমাদের প্রশ্নবিদ্ধ। সে কখনো শিক্ষার্থীদের কথা ভাবেনি বরং সে স্বেচ্ছাচারিতা ও চাটুকারিতাকে প্রাধান্য দিয়েছে। আমাদের শিক্ষক হিসেবে তার উচিত ছিল আমাদের শিক্ষা দেওয়া। কিন্তু তিনি এতে ব্যর্থ হয়েছেন। এমন অযোগ্য শিক্ষকের আমরা অপসারণ চাই।

বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী আসাদ সাদিক রাফি বলেন, ড. সুজন সেনের অনিয়মের বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের আজকে ১৮ দিন হলো। কিন্তু তদন্ত কমিটি শিক্ষার্থীদের সাথে এখন পর্যন্ত কোন ধরনের যোগাযোগ করেনি। আসলে কি তারা এসি রুমে বসে তদন্ত করতাছে? এ ধরনের তদন্ত আমরা মেনে নেব না। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী নৈতিকতার স্থলন ঘটলে তাকে অপসারণের সুযোগ আছে। আমরা চাই, এই আইনের আওতায় নিয়ে এসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করবে।

মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী কুয়াশা, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী পরমা পারমিতা, চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আবু রায়হান জনি ও মো. সাকিবুল বক্তব্য দেন। এসময় বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে, ড. সুজন সেনকে চলতি বছরের ২৫ আগস্ট বিভাগ থেকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর গত মাসের ৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য, ছাত্র উপদেষ্টা ও বিভাগের সভাপতির কাছে প্রমাণসহ প্রায় ২০০ পৃষ্ঠার এক লিখিত অভিযোগ জমা দেন তারা। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ৯ সেপ্টেম্বর এক জরুরি সভায় ড. সুজন সেনকে বিভাগের সকল কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয় এবং তার অনিয়ম ও দূর্নীতি তদন্তে ১৮ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।


প্রসঙ্গনিউজ২৪/জে.সি

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

শিক্ষকের প্রতি ছবি আঁকার চ্যালেঞ্জ ছুঁড়লেন রাবি চারুকলার শিক্ষার্থীরা

আপডেট সময় : ০৫:২৫:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ অক্টোবর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক:


রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) চারুকলা অনুষদের চিত্রকলা, প্রাচ্যকলা ও ছাপচিত্র বিভাগের শিক্ষক ড. সুজন সেনের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেছেন, ‘আমি আজকে চ্যালেঞ্জ করলাম, চারুকলার যে কোন একজন শিক্ষার্থী দাঁড়াবে, অন্যদিকে সুজন সেন দাঁড়াবে, যদি সুজন সেন তার থেকে ভালো ছবি আঁকতে পারে তাহলে আমরা সকল প্রকার আন্দোলন প্রত্যাহার করব এবং তাকে আগের মতো ক্লাসে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করব।’

রবিবার দুপুওে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে ড. সুজন সেনের অপকর্মের নিরপেক্ষ তদন্ত ও অপসারণের দাবিতে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন ওই ছাত্র। ড. সুজন সেনকে অযোগ্য, স্বৈরাচার, দূর্নীতিবাজ, দালাল ও চাটুকার আখ্যা দিয়ে বিভাগের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।

মানববন্ধনে ড. সুজন সেনকে চ্যালেঞ্জ করা আবু রায়হান নামের এই শিক্ষার্থী আরও বলেন, ড. সুজন সেনের বিভিন্ন অনিয়মের প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। আমরা তদন্ত কমিটিকে নিরপেক্ষ তদন্ত করার আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা প্রশাসনকে বলে দিতে চাই, আপনাদের এ তদন্ত যদি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে হয়, তাহলে এটা কোনভাবেই আমরা মেনে নেব না। আমরা আরও দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবো।

মানববন্ধনে বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সরোয়ার জাহান বলেন, আমরা আজকে একটা অযোগ্য শিক্ষকের বিরুদ্ধে এখানে দাঁড়িয়েছি। আমি গত পাঁচ বছরে তাকে ক্লাসের কোনো কাজ শিখিয়ে দিতে দেখিনি। আমাদের বেশিরভাগ কাজ ব্যবহারিক। কিন্তু আমরা তাকে ব্যবহারিক কাজে কখনও দেখিনি। যারা সুজন সেনের পক্ষে দালালি করছে আমরা তাদের হুশিয়ার করে বলে দিচ্ছি, অযোগ্য কারোর পক্ষে দালালি করবেন না। এর ফল ভালো হবে না। আমরা শিক্ষার্থীরা এর সমুচিত জবাব দেবো। শিক্ষার্থীরা আপনাদের প্রতিপক্ষ না। আমি চাই প্রশাসন স্বচ্ছতার সাথে একটি সুন্দর তদন্ত করুক। তবে সুজন সেনের যতদিন পর্যন্ত চাকরিচ্যুতি না হচ্ছে, আমরা এই রাজপথ ছাড়বো না।

চতুর্থ বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী আসিফা পারভিন পুঁথি বলেন, চারুকলার শিক্ষক হওয়া সত্বেও সুজন সেন কখনো আমাদের পেজগুলিতে একটি পেন্সিলের দাগও দিয়ে দেখায়নি। এখানেই তার যোগ্যতা আমাদের প্রশ্নবিদ্ধ। সে কখনো শিক্ষার্থীদের কথা ভাবেনি বরং সে স্বেচ্ছাচারিতা ও চাটুকারিতাকে প্রাধান্য দিয়েছে। আমাদের শিক্ষক হিসেবে তার উচিত ছিল আমাদের শিক্ষা দেওয়া। কিন্তু তিনি এতে ব্যর্থ হয়েছেন। এমন অযোগ্য শিক্ষকের আমরা অপসারণ চাই।

বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী আসাদ সাদিক রাফি বলেন, ড. সুজন সেনের অনিয়মের বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের আজকে ১৮ দিন হলো। কিন্তু তদন্ত কমিটি শিক্ষার্থীদের সাথে এখন পর্যন্ত কোন ধরনের যোগাযোগ করেনি। আসলে কি তারা এসি রুমে বসে তদন্ত করতাছে? এ ধরনের তদন্ত আমরা মেনে নেব না। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী নৈতিকতার স্থলন ঘটলে তাকে অপসারণের সুযোগ আছে। আমরা চাই, এই আইনের আওতায় নিয়ে এসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করবে।

মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী কুয়াশা, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী পরমা পারমিতা, চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আবু রায়হান জনি ও মো. সাকিবুল বক্তব্য দেন। এসময় বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে, ড. সুজন সেনকে চলতি বছরের ২৫ আগস্ট বিভাগ থেকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর গত মাসের ৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য, ছাত্র উপদেষ্টা ও বিভাগের সভাপতির কাছে প্রমাণসহ প্রায় ২০০ পৃষ্ঠার এক লিখিত অভিযোগ জমা দেন তারা। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ৯ সেপ্টেম্বর এক জরুরি সভায় ড. সুজন সেনকে বিভাগের সকল কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয় এবং তার অনিয়ম ও দূর্নীতি তদন্তে ১৮ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।


প্রসঙ্গনিউজ২৪/জে.সি