ঢাকা ০৫:৪৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সরকারি হাসপাতালে নেই স্যালাইন, চলছে দোকান সিন্ডিকেট: দায়সারছেন প্রশাসন

সারোয়ার হোসেন
  • আপডেট সময় : ০৪:৩৮:০৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১১৫ বার পড়া হয়েছে

তানোর সরকারি হাসপাতালে নেই স্যালাইন চলছে দোকান সিন্ডিকেট

তানোর প্রতিনিধি:


রাজশাহীর তানোরে প্রায় মাস ধরে কলেরা ইঞ্জেকশন স্যালাইনের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এসুযোগে ঔষুধ ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে নির্ধারিত মূল্যের তিন থেকে চারগুণ বেশি দামে বিক্রি করছেন বলেও অহরহ অভিযোগ উঠেছে।

এছাড়াও সরকারি হাসপাতালে নেই কোন স্যালাইন। এতে করে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা দরিদ্র অসহায় রোগীরা। অথচ ফার্মেসীর দোকানগুলোতে পর্যাপ্ত স্যালাইন থাকলেও কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বাড়তি দাম নিচ্ছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। ফলে এসব অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন ভুক্তভোগীরা।

জানা গেছে , জলবায়ুর বিরুপ প্রভাবের কারনে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা দিনের দিন বাড়তেই আছে। এরোগ থেকে ছোট বড় কেউ রক্ষা পচ্ছেন না। এরোগের প্রভাব বাড়লেও পর্যাপ্ত পরিমান তো দূরে থাক কোন স্যালাইন সরবরাহ নাই।
গত প্রায় একমাস ধরে একটিও স্যালাইন সরবরাহ না থাকলেও রোগীর সংখ্যা বাড়তেই আছে। এসুযোগকে কাজে লাগিয়ে ওষুধ ব্যবসায়ীরা ৯০ টাকা মূল্যের কলেরা ইঞ্জেকশন স্যালাইনের দাম নিচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা ঊর্ধ্বে ৩০০ টাকাও আদায় করছেন।

ভুক্তভোগীরা বলেন, আমরা বাড়তি দামে স্যালাইন কিনেছি। কিন্তু কোন ফার্মেসীর নাম বলতে পারব না। কারন তাহলে আর স্যালাইন বিক্রি করবেনা আমাদের কাছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন স্যালাইনের সংকট, তীল পরিমান স্যালাইন নেই, লিখে দিচ্ছেন আর আমরা কিনছি অতিরিক্ত টাকায়। যদি সংকট থাকে তাহলে দোকানে বাড়তি টাকায় কিভাবে বিক্রি করছেন। এসব কিছুই না সিন্ডিকেট করে রোগীদের পকেট কাটতেই এমন ফাঁদ পাতা হয়েছে।

প্রতিটি জিনিসে এভাবে সিন্ডিকেট হলে আমাদের মত রোগিরা যাবে কোথায়! যেখানে মানুষের জীবন মরনের খেলা সেখানেও কিভাবে সিন্ডিকেট করে এত বাড়তি দাম নেয়! এসবের জন্য কি কোন প্রশাসন নেই? নাকি সিন্ডিকেট চক্রের কাছে সবাই জিম্মি হয়ে পড়েছে? দীর্ঘ প্রায় একমাস ধরে এমন অবস্থা চললেও কোন দিন প্রশাসন অভিযান দিল না। ওষুধ ব্যবসায়ীরা লাগাম হীন অনিয়ম করছেন।

এদিকে এমআরপি অনুযায়ী ওষুধ বিক্রির জন্য বাংলাদেশ ড্রাগিষ্ট এন্ড কেমিষ্ট তানোরে সমিতি গঠন করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে এমআরপির চেয়ে বেশি দাম নিলে জরিমানা সহ শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু স্যালাইনের দাম বেশি নিলেও কোন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি। নাকি তারাই এ সিন্ডিকেটের হোতা এমন প্রশ্নও বিরাজমান জনমুখে।

সমিতির এমআরপির তত্বাবধায়ক ও আহবায়ক শামীম চৌধুরী জানান, আজ আমরা এসব নিয়ে মিটিং করব। সন্ধ্যার পরে আপনার সাথে কথা হবে বলে দায় সারেন।

সমিতির সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলাম বলেন, স্যালাইন সংকট আছে ও ৯০ টাকা এমআর থাকলেও ১২০-৩০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এখানে ২০০-২৫০ ও ৩০০ টাকা করে নাকি বিক্রি হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি জানান এটা আমার অজানা।

সভপতি সোবহান মন্ডল দিলিপ বলেন, এমআরপির চেয়ে বাড়তি দাম নিলে বাঁশ দিয়ে দাও।

টিএইচও বার্নাবাস হাঁসদাক প্রসঙ্গনিউজকে বলেন, এ হাসপাতালে রোগী অনুযায়ী স্যালাইন আছে, তবে দেশে স্যালাইন সংকট রয়েছে সামান্য পরিমানে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন স্যালাইন সংকটের কথা শিকার করে বলেন, ভারত থেকে আমদানি করবে সরকার।তবে এসুযোগে কিছু বাড়তি দাম নিচ্ছেন এসব অসাধু ব্যবসায়ীরা। এসব নীতি নৈতিকতার বিষয়, অল্প সময়ের মধ্যে সকল ফার্মেসীর বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


প্রসঙ্গনিউজবিডি/জে.সি

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

সরকারি হাসপাতালে নেই স্যালাইন, চলছে দোকান সিন্ডিকেট: দায়সারছেন প্রশাসন

আপডেট সময় : ০৪:৩৮:০৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩

তানোর প্রতিনিধি:


রাজশাহীর তানোরে প্রায় মাস ধরে কলেরা ইঞ্জেকশন স্যালাইনের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এসুযোগে ঔষুধ ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে নির্ধারিত মূল্যের তিন থেকে চারগুণ বেশি দামে বিক্রি করছেন বলেও অহরহ অভিযোগ উঠেছে।

এছাড়াও সরকারি হাসপাতালে নেই কোন স্যালাইন। এতে করে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা দরিদ্র অসহায় রোগীরা। অথচ ফার্মেসীর দোকানগুলোতে পর্যাপ্ত স্যালাইন থাকলেও কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বাড়তি দাম নিচ্ছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। ফলে এসব অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন ভুক্তভোগীরা।

জানা গেছে , জলবায়ুর বিরুপ প্রভাবের কারনে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা দিনের দিন বাড়তেই আছে। এরোগ থেকে ছোট বড় কেউ রক্ষা পচ্ছেন না। এরোগের প্রভাব বাড়লেও পর্যাপ্ত পরিমান তো দূরে থাক কোন স্যালাইন সরবরাহ নাই।
গত প্রায় একমাস ধরে একটিও স্যালাইন সরবরাহ না থাকলেও রোগীর সংখ্যা বাড়তেই আছে। এসুযোগকে কাজে লাগিয়ে ওষুধ ব্যবসায়ীরা ৯০ টাকা মূল্যের কলেরা ইঞ্জেকশন স্যালাইনের দাম নিচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা ঊর্ধ্বে ৩০০ টাকাও আদায় করছেন।

ভুক্তভোগীরা বলেন, আমরা বাড়তি দামে স্যালাইন কিনেছি। কিন্তু কোন ফার্মেসীর নাম বলতে পারব না। কারন তাহলে আর স্যালাইন বিক্রি করবেনা আমাদের কাছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন স্যালাইনের সংকট, তীল পরিমান স্যালাইন নেই, লিখে দিচ্ছেন আর আমরা কিনছি অতিরিক্ত টাকায়। যদি সংকট থাকে তাহলে দোকানে বাড়তি টাকায় কিভাবে বিক্রি করছেন। এসব কিছুই না সিন্ডিকেট করে রোগীদের পকেট কাটতেই এমন ফাঁদ পাতা হয়েছে।

প্রতিটি জিনিসে এভাবে সিন্ডিকেট হলে আমাদের মত রোগিরা যাবে কোথায়! যেখানে মানুষের জীবন মরনের খেলা সেখানেও কিভাবে সিন্ডিকেট করে এত বাড়তি দাম নেয়! এসবের জন্য কি কোন প্রশাসন নেই? নাকি সিন্ডিকেট চক্রের কাছে সবাই জিম্মি হয়ে পড়েছে? দীর্ঘ প্রায় একমাস ধরে এমন অবস্থা চললেও কোন দিন প্রশাসন অভিযান দিল না। ওষুধ ব্যবসায়ীরা লাগাম হীন অনিয়ম করছেন।

এদিকে এমআরপি অনুযায়ী ওষুধ বিক্রির জন্য বাংলাদেশ ড্রাগিষ্ট এন্ড কেমিষ্ট তানোরে সমিতি গঠন করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে এমআরপির চেয়ে বেশি দাম নিলে জরিমানা সহ শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু স্যালাইনের দাম বেশি নিলেও কোন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি। নাকি তারাই এ সিন্ডিকেটের হোতা এমন প্রশ্নও বিরাজমান জনমুখে।

সমিতির এমআরপির তত্বাবধায়ক ও আহবায়ক শামীম চৌধুরী জানান, আজ আমরা এসব নিয়ে মিটিং করব। সন্ধ্যার পরে আপনার সাথে কথা হবে বলে দায় সারেন।

সমিতির সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলাম বলেন, স্যালাইন সংকট আছে ও ৯০ টাকা এমআর থাকলেও ১২০-৩০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এখানে ২০০-২৫০ ও ৩০০ টাকা করে নাকি বিক্রি হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি জানান এটা আমার অজানা।

সভপতি সোবহান মন্ডল দিলিপ বলেন, এমআরপির চেয়ে বাড়তি দাম নিলে বাঁশ দিয়ে দাও।

টিএইচও বার্নাবাস হাঁসদাক প্রসঙ্গনিউজকে বলেন, এ হাসপাতালে রোগী অনুযায়ী স্যালাইন আছে, তবে দেশে স্যালাইন সংকট রয়েছে সামান্য পরিমানে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন স্যালাইন সংকটের কথা শিকার করে বলেন, ভারত থেকে আমদানি করবে সরকার।তবে এসুযোগে কিছু বাড়তি দাম নিচ্ছেন এসব অসাধু ব্যবসায়ীরা। এসব নীতি নৈতিকতার বিষয়, অল্প সময়ের মধ্যে সকল ফার্মেসীর বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


প্রসঙ্গনিউজবিডি/জে.সি