তানোরে গোপনে নিয়োগ তিন দিনেও হয়নি ফলাফল ঘোষণা
- আপডেট সময় : ০৪:৩৭:৪১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ জুলাই ২০২৩ ৮২ বার পড়া হয়েছে
তানোর প্রতিনিধি:
রাজশাহীর তানোরে গোপনে দুটি কলেজের ৫ টি শূন্যপদে বিশাল বানিজ্যে করে নিয়োগ পরিক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কলেজ অধ্যাক্ষরা। চলতি মাসের (৮জুলাই)শনিবার সকাল ১০ টা থেকে সাড়ে ১১ টা পর্যন্ত শহরের নিউ ডিগ্রী কলেজে অনুষ্ঠিত হয় নিয়োগ পরিক্ষা। তবে পরিক্ষার তিন দিন অতিবাহিত হলেও রহস্য জনক কারনে ফলাফল ঘোষণা করা হয়নি। আবার একাধিক আবেদন পড়লেও অজ্ঞাত কারনে অংশ নেয়নি পরিক্ষায়। এতে করে নিয়োগ পরিক্ষা নিয়ে উঠেছে নানান সমালোচনা, সেই সাথে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে।
জানা গেছে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে উপজেলার কিসমত বিল্লি স্কুল এন্ড কলেজের দুটি ও মুন্ডুমালা মহিলা ডিগ্রী কলেজের তিনটি শূণ্য পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। সে মোতাবেক বিল্লি কলেজের দুটি পদের বিপরীতে আবেদন পড়ে ২২ টি। তার মধ্যে রশায়ন সহকারী ল্যাবে ৯ জন ও উদ্ভিদ বিজ্ঞান সহকারী ল্যাব পদে ১৩ জন আবেদন করেন।
কিন্তু পরিক্ষায় রশায়ন ল্যাবে ৪ জন ও উদ্ভিদ বিজ্ঞান ল্যাবে ৫ জন, মোট ৯ নিয়োগ প্রার্থী অংশ গ্রহন করেন।
অধ্যাক্ষ জামিলুর রহমান বলেন, যে ২২ জন আবেদন করেছিল, তাদের সবাইকে নিয়োগ পরিক্ষার কার্ড দেয়া হয়েছিল। কিন্তু ৯ জন অংশ নেয়। সকাল ১০ টা থেকে সাড়ে ১১ টার মধ্যে লিখিত মৌখিক পরিক্ষা শেষ হয়।
কিভাবে নিয়োগ হয় সবার জানা। উপস্থিত থাকতে হবে তাই থাকা লাগে। পরিক্ষার ফলাফল ঘোষনা হয়েছে কি জানতে চাইলে তিনি জানান কলেজ ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না। তিনি অসুস্থ থাকার কারনে ঘোষনা হয়নি।
তিনি তো শনিবার শেষ বিকেলে অসুস্থ হয়েছেন তাহলে ফলাফল ঘোষনা হল না কি কারনে এবং নিজ কলেজ রেখে শহরের কলেজে কেন নিয়োগ পরিক্ষা জানতে চাইলে তিনি জানান ডিজির প্রতিনিধি যেখানে মনে করবেন সেখানেই পরিক্ষা নিতে পারবেন, আর ফলাফল ঘোষনার বিষয়ে কোন সদ উত্তর না দিয়ে নিয়োগ কাদের হাতে সবই জানা বলে দায় সারেন তিনি।
এদিকে মুন্ডুমালা মহিলা ডিগ্রী কলেজে ৩ টি শূণ্য পদের বিপরীতে ৩০ টি আবেদন পড়ে, যাচাই বাছায়ে ২৭ টি আবেদন টিকে। পরিক্ষায় অংশ নেয় মাত্র ১০ জন। পদগুলো হল রশায়ন ল্যাব সহকারী পদে পরিক্ষায় অংশ নেয় ৪ জন, প্রাণী বিজ্ঞান ল্যাব সহকারী পদে ৩ জন ও পদার্থ বিজ্ঞান ল্যাব পদে ৩ জন করে মোট ১০ জন। কলেজ অধ্যাক্ষ সহিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের ও বিল্লি কলেজে একই সময়ে একই কলেজে ও একই ডিজির প্রতিনিধির মাধ্যমে পরিক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অসুস্থ হওয়ার কারনে ফলাফল ঘোষনা করা হয়নি।
নিয়োগ পরিক্ষার্থীরা জানান, পরিক্ষা হয়েছে শনিবারে অথচ ফলাফল ঘোষনা করছে না। সভাপতি অসুস্থ দোহায়ে ঘোষনা করছেন না। আমরা চরম অস্থিরতায় আছি।
একাধিক আবেদন কারীরা জানান, আবেদন করার পর জানতে পারলাম আগে থেকেই সব লেনদেন হয়ে গেছে। এমনকি দরদাম করে প্রার্থী টিক করা হয়েছে। যে বেশি টাকা দিতে রাজি হয়েছে তার চাকুরী হবে। তাহলে লোক দেখানো পরিক্ষায় অংশ নিয়ে লাভ কি। যেখানে মেধার কোন মূল্য নেই, মূল্য আছে টাকার মামা খালু আর ক্ষমতার। যেখানে পিয়ন আয়া পদে ১০,১২,১৪ লাখ টাকা পর্যন্ত নেয়া হয়। তাহলে এসব পদে কত লাগবে বুঝতে হবে।
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না অসুস্থ হয়ে রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তবে তিনি শনিবার সকালে নিয়োগ পরিক্ষারর সময় ছিলেন বলে জানান অধ্যাক্ষ জামিলুর রহমান।
ডিজির প্রতিনিধি নিউ ডিগ্রি কলেজের প্রিন্সিপ্যাল প্রফেসার কালা চাদ শীলের ০১৯৪১ ৩৬০২৯০ মোবাইল নম্বরে ফোন দেয়া হলে অন্য একজন ধরে বলেন স্যার মোবাইলে কথা বলেনা টেলিফোনে কথা বলেন। তিনি ০২৫৮৮৮৫০৬৩০ টেলিফোন নম্বর দিয়ে যোগাযোগ করতে পরামর্শ দেন। টেলিফোনে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও রিসিভ হয়নি। এজন্য এসংক্রান্ত বক্তব্য পাওয়া যায়নি প্রিন্সিপালের।
প্রসঙ্গনিউজবিডি/জে.সি