তানোরে চলছে জেলা প্রশাসকের সাইনবোর্ডে পুকুর খননের রমরমা ব্যবসা
- আপডেট সময় : ০৪:০৩:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ মে ২০২৩ ৭২ বার পড়া হয়েছে
তানোর প্রতিনিধি:
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অমান্য করে জেলা প্রশাসক ডিসির আদেশে রাজশাহীর তানোরে কৃষি ফসলী জমিতে পুকুর খনন শুরু হয়েছে। সম্প্রতি বোরো ধান কাটা হয়েছে জমিগুলো থেকে। জমিতেই বাঁশের খুটি পুতে সাটানো হয়েছে সাইনবোর্ড। লিখা আছে রাজশাহী স্বপ্নচাষ সমন্বিত কৃষি সমবায় সমিতি,নিবন্ধন নম্বর ১৬০৭, পক্ষে জেলা প্রশাসক।
এমন সাইনবোর্ড লিখে কৃষি ফসলী জমিতে পুকুর খননের খবর ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে, রক্ষক কেন নির্দেশদাতা, সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা কি ভাবে আদেশ দিলেন, কিসের বিনিময়ে জেলা জুড়ে এমন ঘটনার জন্ম দিয়ে কেনই তিনি প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়লেন ?
কি এমন ক্ষমতার বলে সরকার প্রধানের নির্দেশ অমান্য করে চান্দুড়িয়া ইউনিয়ন( ইউপির) ব্রীজ ঘাটের উত্তরে বন্যা নিয়ন্ত্রিত বাঁধের পূর্বদিকে বিস্তৃর্ণ ফসলী জমিতে পুকুর খনন শুরু করেছেন রাজশাহী স্বপ্নচাষ সমন্বিত কৃষি সমবায় সমিতির সাইনবোর্ডে ?
সমিতির নিবন্ধন নং ১৬০৭, পক্ষে জেলা প্রশাসক। এতে করে ডিসির এমন কর্মকান্ডে চরম বিব্রত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। ফলে দ্রুত বন্ধ করে কৃষি জমি রক্ষার দাবি উঠেছে জোরালো ভাবে। তবে জেলা প্রশাসক (ডিসি) শামিম আহম্মেদের সাথে মোবাইলে বৃহস্পতিবার দুপুরের আগে কথা বলা হলে তিনি বলেন, স্বপ্নচাষ সমন্বিত কৃষি সমবায় সমিতি টি হচ্ছে জেলার বাগমারা উপজেলার চরম পন্থিদের। সরকারের কাছে আত্ম সমর্পন করেছিল তারা। সরকার তাদের পুনর্বাসনের জন্য সমিতি করে দেয়। আর আমি সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে সমিতি দেখভাল করি। কিন্তু কৃষি ফসলী জমিতে পুকুর খননের কোন অনুমতি দেওয়া হয়নি।
পুকুর খননের জায়গাতে বা কৃষি জমিতে সমিতি যে সাইনবোর্ড মেরেছে সেখানে পক্ষে জেলা প্রশাসক লিখা আছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আপনি কি সাইনবোর্ডের কাছে আছেন ? উত্তরে না, গত মঙ্গলবারে ছবি তুলে নিয়ে এসেছি। ঠিক আছে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, চান্দুড়িয়া ইউপিতে প্রায় জমিতে পুকুর খনন হয়ে গেছে। কৃষি শ্রমিকরা কোন কাজ পাচ্ছে না। বিশেষ করে হাড়দহ বিল হলেও তিনটি করে ফসল হত এবং আশপাশের গ্রামের মানুষ প্রচুর গরু, ছাগল ও ভেড়া লালন পালন করে জীবন পরিচালনা করত। বর্তমানে ৪০-৪৫ বিঘা জমি ফাঁকা ছিল। এবার সেখানে শুরু হয়েছে পুকুর খনন।
পুকুর হলে ইউপিতে তেমন ভাবে কৃষি জমি থাকবে না। আবার বর্ষা বন্যা মৌসুমে হড়দহ গ্রামের অনেক মৎস্যা জীবিরা মাছ মেরে জীবিকা নির্বাহ করত। সেটা বন্ধ হয়ে গেছে। যেখানে পুরাতন পুকুর সংস্কার করতে হলে অনুমতি নিতে হয়। আর কৃষি ফসলী জমিতে চারটির মত ভেকু মেশিন দিয়ে দাপটের সাথে পুকুর খনন করা হচ্ছে। অথচ প্রশাসন রহস্য জনক কারনে নিরব। কারন একটাই সাইন বোর্ডে পক্ষে জেলা প্রশাসক। মুলত এজন্য উপজেলা পর্যায়ের প্রশাসনরা কিছুই করতে পারছেন না।
সুত্রে জানা যায়, বর্তমানে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা ও ব্যাপক খাদ্য ঘাটতি চলছে। কিন্তু বাংলার পা ফাঁটা কৃষকদের জন্য দেশে কোন খাদ্য ঘাটতি নেই। এছাড়াও এ উপজেলাকে কৃষি ভান্ডার হিসেবে ধরা হয়। প্রধান চাষ ধান তারপর আলু এরপরেই রয়েছে মাছ উৎপাদন। কিন্তু বিগত ১৪-১৫ বছরে মধ্যে ব্যাপকহারে কৃষি জমিতে পুকুর হয়েছে। কমেছে প্রচুর কৃষি জমি।
এভাবে পুকুর হতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে খাদ্য ঘাটতির আশংকা করছেন কৃষি বিভাগ। সম্প্রতি বোরো ধান কাটা শেষের দিকে, বাম্পার ফলন হয়েছে এবার। যা চাহিদার তুলনায় কয়েকগুন বেশি ধান উৎপাদন হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কৃষি দপ্তর।
এবিষয়ে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার রাজস্ব যুগ্ন সচিব ইমতিয়াজ হোসেনের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জায়গার লোকেসন নেন এবং সাইনবোর্ড ও কৃষি জমির ছবি হটসআপে চান। ছবি লোকেসান দেওয়ার পর তিনি বলেন বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে।
প্রসঙ্গনিউজবিডি/জে.সি