সংবাদ প্রকাশ করায় ঢাবি সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের অপপ্রচার
- আপডেট সময় : ০৫:১৪:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪ ৫৪ বার পড়া হয়েছে
নিউজ ডেস্ক:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আইন বিভাগের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে আয়োজিত প্রোডাক্টিভ রমাদান শীর্ষক রমজানের আলোচনা সভায় ছাত্রলীগের হামলার সংবাদ প্রকাশ করায় এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতপন্থী নেতাকর্মীদের অপপ্রচার চালানোর অভিযোগ উঠেছে।
রোববার (১৭ মার্চ) দৈনিক ইনকিলাবে শুধু বহিরাগত নয়, হামলাকারীদের বড় অংশ সৈকতের অনুসারী শিরোনামে সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ভুক্তভোগীদের মাধ্যমে হামলাকারীদের কয়েকজনকে সনাক্ত করে একটি সংবাদ প্রকাশ করে পত্রিকাটির বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার রাহাদ উদ্দিন। পরে এই সাংবাদিকের একটি ছবি সংযুক্ত করে ভুয়া পোস্টার বানিয়ে তাকে হামলাকারী বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালাতে দেখা গেছে।
জানা যায়, সংবাদ প্রকাশের পরপরই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের অনুসারী ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের উপ-প্রকাশনা সম্পাদক শেখ ইমরান ইসলাম ইমন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে সাংবাদিক রাহাদের ছবি ব্যবহার করে ভুয়া পোস্টার বানিয়ে এ অপপ্রচার চালায়। পরবর্তীতে ঢাবি ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক নাঈমুর রহমানসহ আরও বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীকে একই কাজের অনুকরণ করতে দেখা যায়।
শুধু বহিরাগত নয়, হামলাকারীদের বড় অংশ সৈকতের অনুসারী শিরোনামে আসা ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, হামলার ঘটনায় সংবাদমাধ্যমগুলোতে ঘটনা পরবর্তী সময়ে প্রকাশিত সংবাদে বহিরাগত ছাত্রলীগের’ কথা উল্লেখ করা হলেও মূলত তাদের বেশিরভাগই ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের অনুসারী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী।
সংবাদে আরও বলা হয়, মূলত নিজেকে আড়াল করার অপচেষ্টা থেকে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত শাহবাগ থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তাওহীদুল ইসলাম ওরফে সুজনকে ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তাই এ হামলার অগ্রভাগে সুজনসহ তার কিছু বহিরাগত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর নাম এসেছে। তবে বেশিরভাগ হামলাকারীই ছিল সৈকতের অনুসারী শাখা ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী।
ছাত্রলীগের এমন অপপ্রচারের বিষয়ে দৈনিক ইনকিলাবের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক রাহাদ উদ্দিন বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ও ভুক্তভোগীদের মাধ্যমে কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতাকে সনাক্ত করে একটি সংবাদ প্রকাশের জেরে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন একটি পোস্টার বানিয়ে আমার নামে অপপ্রচার চালাচ্ছে। প্রথম যিনি আমার নামে এই অপপ্রচার চালিয়েছেন তার সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত কোন দ্বান্দ্ব নেই, বরং ভালো সম্পর্কই ছিল। শেখ ইমরান ইসলাম ইমন নামের ওই ব্যক্তি আমার হলের সিনিয়র। এমনকি আমার করা ওই সংবাদেও তার কোনো সংশ্লিষ্টতা ছিল না। সম্ভাবত নেতাকে খুশি করার জন্য তিনি ওই পোস্টার বানিয়ে আমার নামে অপ্রচার চালিয়েছেন। আমি তার বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়ায় পদক্ষেপ নিব।
এদিকে এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি সংগঠন ‘গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি’। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা বলছেন, বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিককেই হামলাকারী হিসেবে প্রচার করার মাধ্যমে বাকস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ এবং গণমাধ্যমের টুটি চেপে ধরার মতো ঘৃণ্য খেলায় মেতে উঠেছে ছাত্রলীগ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের এমন অপপ্রচার বেমানান এবং নিজেদের অপরাধ ঢাকার নিমিত্তে একজন বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে এমন অপপ্রচারের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্তদের প্রধান শেখ ইমরান ইসলাম ইমন বলেন, আমি রাজনৈতিক কাজে ব্যস্ত আছি। পরে ফোন করেন। তবে বাকিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
প্রসঙ্গনিউজ২৪/জে.সি