সেই অস্ত্রধারি শিক্ষক রামেক ছাত্রলীগ নেতা ছিলেন
- আপডেট সময় : ০৫:১৪:৩৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ মার্চ ২০২৪ ২১৬ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবদেক:
সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজে শ্রেণীকক্ষে শিক্ষার্থীকে গুলি করার অভিযোগে গ্রেপ্তার শিক্ষক ডা. রায়হান শরীফের অস্ত্রের প্রতি ঝোঁক ছিল ছাত্রজীবন থেকেই।
২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন ডা. রায়হান। সেসময় তিনি কলেজের পিঙ্কু হোস্টেলে থাকতেন। তখন থেকেই নিজের টাকায় বিভিন্ন সময়ে অস্ত্র কিনে সংগ্রহে রাখতেন তিনি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখাকে (ডিবি) এমন তথ্য জানিয়েছেন ডা. রায়হান শরীফ।
সিরাজগঞ্জ ডিবির ওসি জুলহাজ উদ্দীন বলেন, ‘রায়হান শরীফের ব্যাগ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, ৮১ রাউন্ড তাজা গুলি, ১টি গুলির খোসা, ৪টি ম্যাগজিন, ২টি বিদেশি কাতানা (ছোরা) ও ১০টি অত্যাধুনিক বার্মিজ চাকু উদ্ধার করা হয়েছে।’
সিরাজগঞ্জ থেকে ২০০৭ সালে মাধ্যমিক ও ২০০৯ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন রায়হান। ২০১০-২০১১ শিক্ষাবর্ষে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। ২০১৩ সাল থেকে কলেজ শাখার ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ পান। তখন থেকে অস্ত্রের প্রতি ঝোঁক ছিল তার।
ডা. রায়হান শরীফ কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক। সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কলেজে ক্লাসরুমের ভেতর তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত আমিন তমালকে তিনি গুলি করেন। ফরেনসিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের শিডিউল বহির্ভূত পাঠদান নিয়ে বাগবিতণ্ডার জেরে তিনি তমালকে গুলি করেন। ওই ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের হাতে লাঞ্ছিত হন তিনি।
চিকিৎসক রায়হানের অপসারণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের রোষানল থেকে বাঁচাতে কলেজের ভিতর পুলিশ হেফাজতে রাখা হয় তাকে। পরে পুলিশ তাকে আটক করে।
এ ঘটনায় রাত সাড়ে ১১টার দিকে অভিযুক্ত অস্ত্র আইনে সিরাজগঞ্জ সদর থানায় মামলা করেন তমালের বাবা সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট আবদুল্লাহ আল আমিন। তিনি বগুড়া উপজেলা সদরের ধানসিঁড়ি নাটাইল গ্রামের বাসিন্দা।
হাসপাতালের পরিচালক ডা. জাহাঙ্গীর আলম জানান, পকেটে থাকা মোবাইল ভেদ করে পিস্তলের গুলি শিক্ষার্থী তমালের তলপেটে বিদ্ধ হয়। পরে বিদ্ধ গুলিটি তমালের শরীর থেকে বের করা হয়। তমাল এখন শঙ্কামুক্ত।
শহরের বিএ কলেজ রোডের বাসিন্দা সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ড. আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে প্রভাষক রায়হান। তার বিরুদ্ধে নারী শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ রয়েছে। তিনি প্রায়ই পিস্তল নিয়ে ক্যাম্পাস ও ক্লাসে আসায় শিক্ষার্থীরা ভয়ে থাকেন।
তার বদলির জন্য অধ্যক্ষের কার্যালয় থেকে একাধিকবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পত্র পাঠানো হলেও ফলপ্রসূ হয়নি। কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক হয়েও গায়ের জোরে ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের শিক্ষার্থীদের অনির্ধারিত ক্লাস নেন রায়হান।
প্রসঙ্গনিউজ২৪/জে.সি