তানোরে প্রধান শিক্ষক আ”লীগ নেতার বিরুদ্ধে গাছ কাটার অভিযোগ

- আপডেট সময় : ০৫:২৮:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ৯১ বার পড়া হয়েছে
তানোর প্রতিনিধি:
রাজশাহীর তানোরে এক প্রধান শিক্ষক ও আ”লীগ নেতার বিরুদ্ধে সরকারি খাস জায়গার তরতাজা গাছ নিধনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার কলমা ইউনিয়ন (ইউপির) চন্দনকোঠা লসকুরির পার্শ্বে ঘটে রয়েছে গাছ কাটার ঘটনাটি। গাছ কাটা ব্যক্তি চন্দনকোঠা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কলমা পূর্ব শাখা আ”লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন।
এঘটনায় চন্দনকোঠা গ্রাম বাসীর পক্ষে রবিউল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি বাদি হয়ে গত বুধবার শিক্ষক আনোয়ারকে বিবাদী করে সহকারী কমিশনার ভূমির নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তরতাজা গাছ কাটায় ওই এলাকায় শিক্ষকের বিরুদ্ধে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে, সেই সাথে জায়গার পার্শ্বে বসবাসরত আদিবাসি জনসাধারনও ব্যাপক ক্ষুব্ধ।
অভিযোগে উল্লেখ, উপজেলার কলমা ইউনিয়ন (ইউপির) চন্দনকোঠা মৌজার অন্তর্গত আরএস ১ নম্বর খাস খতিয়ান ভুক্ত ১৩২ নম্বর আরএস দাগে ২ একর ৩০ শতাংশের মধ্যে ১ একর ৮১ শতাংশ ভিটা ও পুকুর রয়েছে। পুকুরে ও পাড়ে থাকা ৮/১০ টির মত আম গাছ কেটে ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। এর আগেও একই পরিমানে তাল ও আম এবং অন্য প্রজাতির গাছ কেটে ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। এক্ষনে মোট ১ লাখ ২০ হাজার টাকার গাছ বিক্রি করেছেন প্রধান শিক্ষক।
বুধবার দুপুরের দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, দরগাডাংগা থেকে চন্দনকোঠা গ্রামে প্রবেশের পথেই মুল রাস্তা সংলগ্ন পশ্চিম দিকে রয়েছে পুকুর। পুকুরের দক্ষিণ দিকে খাস জায়গার উপরে রয়েছে আম বাগান। বাগানের দক্ষিণে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস। সেখানে যেতেই অনেক আদিবাসী মহিলা পুরুষ এসে জড়ো হয়। তারা বলেন, এটা খাস জায়গা ও পুকুর। জায়গাটিতে আমাদের ছেলে মেয়েরা খেলাধুলা করেন। কিন্তু মাস্টার প্রচুর গালমন্দ করেন।
সে পুরো জায়গাটি বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে রেখেছেন। প্রয়োজনে গরু ছাগল বাধার দরকার হলেও মাস্টার বাধতে দেয়না। তার ভয়ে জায়গায় কেউ যায় না। এমনকি পুকুরে গরুকে গোসল পর্যন্ত করাতে দেয়না। পুকুরে এক জাতীয় শামুক থাকে সেটা আমরা খায়, কিন্তু পুকুরে নামতে দেয়না। আমরাও ভয়ে কিছু বলিনা। আমগাছ গুলো কয়েকদিন ধরে কাটা শুরু করেন। কিন্তু অভিযোগের পর প্রশাসন বন্ধ করে দেয়। সেখানে ৭/৮ টির মত গাছ কাটা অবস্থায় পড়ে আছে। বাকি ৫/৭ টি গাছ কাটা হয়নি। গাছগুলো কাটা পড়লে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি সাধন হবে।
সেখান থেকেই প্রধান শিক্ষক আ”লীগ নেতা আনোয়ার হোসেনের সাথে মোবাইলে কথা বলা হলে তিনি বলেন, আমার পিতা এমপির পিতার কাছ থেকে জায়গা ও পুকুর কিনে নিয়েছিল। পিতা মারা যাওয়ার পর ওয়ারিশ সুত্রে পেয়ে ভোগ দখল করে আসছি। জায়গাটি খাস কেনা বেচা কিভাবে হল জানতে তিনি জানান দলিল খারিজ খাজনা সব আছে, আমি নোয়াখালীতে আছি আগামী রবিবারে ভূমি অফিসে জমির কাগজ দেখানো হবে। তার এমন কথা আদিবাসীদের বলা হলে পরমেস হেমরমের স্ত্রী ঠুনকি মুরমু বলেন, আজ থেকে প্রায় ৭০/৮০ বছর আগে আমার পিতা রামজিদ মুরমু বাড়ি ঘর করে বসবাস করত।
কিন্তু ৪০/৫০ বছর আগে মাস্টারের পিতা কছিমুদ্দিন উচ্ছেদ করে আমাদেরকে তাড়িয়ে দিয়ে জায়গাটি দখলে নিয়েছেন। খাস জায়গা কোন কেনা বেচা হয়নি। এমপির পিতা নাকি মাস্টারের পিতার নিকট জায়গাটি বিক্রি করেছেন জানতে চাইলে আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকজনরা বলেন, যদি নিজের জায়গা হয় তাহলে প্রশাসন এসে গাছ কাটা বন্ধ করে দিল কেন। এসব সব মিথ্যা। আমরা কখনোই শুনিনি যে এমপির পিতা জমি বিক্রি করেছে। মাস্টারের কঠিন শাস্তি হওয়া দরকার।
অভিযোগ কারী রবিউল ইসলাম বলেন, জায়গাটি খাস। এর আগেও আনোয়ার মাস্টার গাছ কেটে বিক্রি করেছিল। আবার আম গাছ কাটা শুরু করেছেন। আ”লীগের পদ পেয়ে নিজেকে বিশাল কিছু মনে করছেন। এটা ভেবেই সরকারি জায়গার গাছ নিধনে মেতে উঠেছে। অভিযোগের পর কর্তৃপক্ষ গাছ কাটা নিষেধ করেছেন।আমরা চাই সরেজমিনে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হোক।
সহকারী কমিশনার ভূমি আবিদা সিফাতের সরকারি মোবাইল নম্বরে ফোন দেয়া হলে বিজি পাওয়া যায়।
প্রসঙ্গনিউজবিডি/জে.সি