ঢাকা ০৯:৩৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫, ৫ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ডা. সাদীকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে রাজশাহীতে মানববন্ধন ভাইরাল সেই বিএনপি নেতা লিয়াকতকে দল থেকে বহিষ্কার বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামে যোগ দিতে সুইজারল্যান্ডের পথে ড. ইউনূস দায়িত্ব নিয়েই বাইডেনের ৭৮ নির্বাহী আদেশ বাতিল ট্রাম্পের সারাদেশে ৫ দিনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও নাগরিক কমিটির উপদেষ্টা হাসান আরিফ আর নেই ঋত্বিক প্রেমিদের তার স্মৃতিবিজরিত বসতভিটার অংশটুকু সংরক্ষণের দাবি বাংলাদেশে দ্রুত নির্বাচনে জোর দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ‘স্বৈরাচারের দোসরদের নয়, জুলাই বিপ্লবে সহায়তাকারী রুয়েট শিক্ষকদের মধ্য থেকে ভিসি চাই’ বিএমডিএর নতুন চেয়ারম্যান হলেন আসাদুজ্জামান

তানোরে বিলের বাঁধের রাস্তা নির্মানে ব্যাপক অনিয়ম

সারোয়ার হোসেন
  • আপডেট সময় : ০৫:২৫:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৩ ১৪১ বার পড়া হয়েছে

তানোর প্রতিনিধি :


রাজশাহীর তানোরের সীমান্ত ঘেষা বিলের বাঁধের রাস্তা নির্মানে ব্যাপক অনিয়ম দূর্নীতি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিল কুমারী বিলের মোহনপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী এমপি আয়েনের জলসা ঘর খ্যাত বাঁধে চলছে বৃষ্টির মধ্যে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কোটি টাকা ব্যয়ে ২৫০০ মিটার রাস্তার কাজ চলমান রয়েছে। এর আগে গত বছরে ওই রাস্তার নিচ থেকে মাটি কেটে উঁচু করা হয়।

মাটি দিয়ে উঁচু করার সময় বাঁধের শতশত ছোটবড় গাছ কেটে মরুপ্রান্তর করে ফেলা হয়েছে বলেও একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেন। নিম্নমানের কাজের জন্য টিকসই নিয়ে উঠেছে নানা প্রশ্ন। তবে এমপি ও কিনে কাজ করা ঘাষিগ্রাম ইউনিয়ন (ইউপির) চেয়ারম্যান বাবলুর ভয়ে কেউ প্রতিবাদ পর্যন্ত করতে পারছেন না। ফলে রাস্তার কাজ নিয়ে জেলা কর্মকর্তাদের সরেজমিনে তদন্ত করার জোর দাবি তুলেছেন। নচেৎ ধাপ্পাবাজির কাজ করে যাবেন চেয়ারম্যান বলেও স্থানীয় দের অহরহ অভিযোগ।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিলকুমারী বিলের ব্রীজ ও পূর্ব দিকের সংযোগ সড়ক বা তুলসী খেত মোড় থেকে দক্ষিণে ২৫০০ মিটার রাস্তার কাজ চলছে। মোড়ে নিম্নমানের খোয়া খাম্বা মারা আছে। কোন ধরনের বালু ছাড়াই মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়েছে। দুপারে এজিং করা হলেও কাঁদা মাটি দিয়েই ভরাট করছেন মিস্ত্রিরা। তারা জানান আমাদের চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম বাবলু যে ভাবে কাজ করতে বলেছেন সেভাবে কাজ করা হচ্ছে। এজিংয়ে বালু খোয়া কেন দিচ্ছেন না জানতে চাইলে তারা জানান আমরা কিছুই বলতে পারব না।

জানা গেছে, বিগত ২০২১-২২ অর্থ বছরে রাস্তার কাজের দরপত্র আহ্বান করা হয়। দরপত্রে মাটির রাস্তার কার্পেটিংয়ের কাজ পান শহরের রায়হান নামের ঠিকাদার। কিন্তু লোকসানের জন্য তিনি কাজটি করেননি বলে নিশ্চিত করেন মোহনপুর এলজিইডি অফিস। কিন্তু সম্প্রতি রাস্তার কাজ কিনে করছেন এমপির বড় ভাই আজহারুল ইসলাম বাবলু ও তাদের সহচর ভুলু।

মোহনপুর উপজেলা প্রকৌশলী সাদরুল ইসলামের মোবাইলে ফোন দেয়া হলে বন্ধ পাওয়া যায়। উপসহকারী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলামের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ২০২১-২২ অর্থ বছরের কাজ। যে সময় দরপত্র আহবান করা হয়েছিল তারপরেই নির্মান সামগ্রীর দাম ব্যাপকহারে বেড়ে যায়। কাজটি পান শহরের ঠিকাদার রায়হান। কিন্তু লোকসান হবে এজন্য সে কাজ করেননি। আমাদের ও এমপির অনুরোধে চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম বাবলু কাজটি করছেন। ২০২১-২২ অর্থ বছরের কাজ এখন কিভাবে ও কাঁদা পানির মধ্যে কার্পেটিংয়ের জন্য ডাবলু বিএম ও এজিং করা যায় কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, রাস্তার কাজটি করা মানেই লোকসান।

কিন্তু দরপত্র আহবান করা হয়েছে কাজ করতেই হবে। সবার অনুরোধে কাজটি হচ্ছে। ২৫০০ মিটার রাস্তার বিপরীতে বরাদ্দ ৯৪ লাখ টাকা। সুত্র মতে, এক অর্থ বছরের কাজ আরেক অর্থ বছরে করার নিয়ম নেই। কারন জুন ফাইনালে সকল কাজের হিসেব দিতে হয়। যদি কোন কাজ না হয়ে থাকে তাহলে সে বরাদ্দ সরকারি কোষাগারে ফেরত দিতে হবে। এখানে সে নিয়ম অমান্য করেছেন মোহনপুর এলজিইডি।

স্থানীয় ঠিকাদারেরা জানান, মোহনপুরে অনেক জনবহুল ভাঙ্গাচোরা পাকা ও মটির রাস্তা আছে অনেক। সেগুলো রাস্তা না করে এমপি আয়েন তার ব্যক্তিগত স্বার্থে বর্ষা মৌসুমে তার জলসা ঘরের বাঁধের রাস্তা করছেন। এরাস্তায় তেমন একটা যানবাহন চলাচল করেনা। শুধু বোরো মৌসুমেে সামান্য পরিমান যান চলে। এর আগে তুলসী খেত থেকে মেলান্দ পর্যন্ত পাকা রাস্তা করা হয়েছে। কিন্তু রাস্তায় অসংখ্য ফাটল ও ভেঙ্গে একাকার।এছাড়াও তুলসী খেত মোড় থেকে গোয়ালপাড়া রাস্তার ধার ভেঙ্গে ঝুকিতে পড়ে আছে।

কার্পেটিং রাস্তা করতে হলে আগে হেয়ারিং বন্ড বা এইচবিবি করে রাখতে হয় কয়েক বছর, তারপর হয় কার্পেটিং। এসব রাস্তা করা মানে সরকারের টাকা পানিতে ফেলা। গতবার মাটি দিয়ে উঁচু করা হল, সেই মাটির উপর করা হচ্ছে কারৃপেটিং রাস্তা। রাস্তা নির্মানের এক দু মাসের মধ্যেই ভেঙ্গে পিচ খোয়া উঠে একাকার হয়ে পড়বে। কারন বাঁধের শতশত গাছ কাটা হয়েছে নির্বিচারে। অপ্রয়োজনীয় রাস্তায় কোটি টাকা জলে পড়া ছাড়া কিছুই না।

ঘাষিগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম বাবলুর ব্যক্তিগত ০১৭১১-০১৩৮৮৪ মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেন নি। তবে তার পার্টনার ভূলু জানান, রাস্তার কাজটি পেয়েছিল শহরের ঠিকাদার রায়হান। সে সিডিউল অনুযায়ী কাজ করলে ৮ লাখ টাকা লোকসান হবে, এজন্য সে কাজ করেননি। এমপি ও এলজিইডির অনুরোধে চেয়ারম্যান ও আমি কাজটি করছি।


প্রসঙ্গনিউজবিডি/জে.সি

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

তানোরে বিলের বাঁধের রাস্তা নির্মানে ব্যাপক অনিয়ম

আপডেট সময় : ০৫:২৫:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৩

তানোর প্রতিনিধি :


রাজশাহীর তানোরের সীমান্ত ঘেষা বিলের বাঁধের রাস্তা নির্মানে ব্যাপক অনিয়ম দূর্নীতি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিল কুমারী বিলের মোহনপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী এমপি আয়েনের জলসা ঘর খ্যাত বাঁধে চলছে বৃষ্টির মধ্যে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কোটি টাকা ব্যয়ে ২৫০০ মিটার রাস্তার কাজ চলমান রয়েছে। এর আগে গত বছরে ওই রাস্তার নিচ থেকে মাটি কেটে উঁচু করা হয়।

মাটি দিয়ে উঁচু করার সময় বাঁধের শতশত ছোটবড় গাছ কেটে মরুপ্রান্তর করে ফেলা হয়েছে বলেও একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেন। নিম্নমানের কাজের জন্য টিকসই নিয়ে উঠেছে নানা প্রশ্ন। তবে এমপি ও কিনে কাজ করা ঘাষিগ্রাম ইউনিয়ন (ইউপির) চেয়ারম্যান বাবলুর ভয়ে কেউ প্রতিবাদ পর্যন্ত করতে পারছেন না। ফলে রাস্তার কাজ নিয়ে জেলা কর্মকর্তাদের সরেজমিনে তদন্ত করার জোর দাবি তুলেছেন। নচেৎ ধাপ্পাবাজির কাজ করে যাবেন চেয়ারম্যান বলেও স্থানীয় দের অহরহ অভিযোগ।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিলকুমারী বিলের ব্রীজ ও পূর্ব দিকের সংযোগ সড়ক বা তুলসী খেত মোড় থেকে দক্ষিণে ২৫০০ মিটার রাস্তার কাজ চলছে। মোড়ে নিম্নমানের খোয়া খাম্বা মারা আছে। কোন ধরনের বালু ছাড়াই মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়েছে। দুপারে এজিং করা হলেও কাঁদা মাটি দিয়েই ভরাট করছেন মিস্ত্রিরা। তারা জানান আমাদের চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম বাবলু যে ভাবে কাজ করতে বলেছেন সেভাবে কাজ করা হচ্ছে। এজিংয়ে বালু খোয়া কেন দিচ্ছেন না জানতে চাইলে তারা জানান আমরা কিছুই বলতে পারব না।

জানা গেছে, বিগত ২০২১-২২ অর্থ বছরে রাস্তার কাজের দরপত্র আহ্বান করা হয়। দরপত্রে মাটির রাস্তার কার্পেটিংয়ের কাজ পান শহরের রায়হান নামের ঠিকাদার। কিন্তু লোকসানের জন্য তিনি কাজটি করেননি বলে নিশ্চিত করেন মোহনপুর এলজিইডি অফিস। কিন্তু সম্প্রতি রাস্তার কাজ কিনে করছেন এমপির বড় ভাই আজহারুল ইসলাম বাবলু ও তাদের সহচর ভুলু।

মোহনপুর উপজেলা প্রকৌশলী সাদরুল ইসলামের মোবাইলে ফোন দেয়া হলে বন্ধ পাওয়া যায়। উপসহকারী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলামের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ২০২১-২২ অর্থ বছরের কাজ। যে সময় দরপত্র আহবান করা হয়েছিল তারপরেই নির্মান সামগ্রীর দাম ব্যাপকহারে বেড়ে যায়। কাজটি পান শহরের ঠিকাদার রায়হান। কিন্তু লোকসান হবে এজন্য সে কাজ করেননি। আমাদের ও এমপির অনুরোধে চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম বাবলু কাজটি করছেন। ২০২১-২২ অর্থ বছরের কাজ এখন কিভাবে ও কাঁদা পানির মধ্যে কার্পেটিংয়ের জন্য ডাবলু বিএম ও এজিং করা যায় কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, রাস্তার কাজটি করা মানেই লোকসান।

কিন্তু দরপত্র আহবান করা হয়েছে কাজ করতেই হবে। সবার অনুরোধে কাজটি হচ্ছে। ২৫০০ মিটার রাস্তার বিপরীতে বরাদ্দ ৯৪ লাখ টাকা। সুত্র মতে, এক অর্থ বছরের কাজ আরেক অর্থ বছরে করার নিয়ম নেই। কারন জুন ফাইনালে সকল কাজের হিসেব দিতে হয়। যদি কোন কাজ না হয়ে থাকে তাহলে সে বরাদ্দ সরকারি কোষাগারে ফেরত দিতে হবে। এখানে সে নিয়ম অমান্য করেছেন মোহনপুর এলজিইডি।

স্থানীয় ঠিকাদারেরা জানান, মোহনপুরে অনেক জনবহুল ভাঙ্গাচোরা পাকা ও মটির রাস্তা আছে অনেক। সেগুলো রাস্তা না করে এমপি আয়েন তার ব্যক্তিগত স্বার্থে বর্ষা মৌসুমে তার জলসা ঘরের বাঁধের রাস্তা করছেন। এরাস্তায় তেমন একটা যানবাহন চলাচল করেনা। শুধু বোরো মৌসুমেে সামান্য পরিমান যান চলে। এর আগে তুলসী খেত থেকে মেলান্দ পর্যন্ত পাকা রাস্তা করা হয়েছে। কিন্তু রাস্তায় অসংখ্য ফাটল ও ভেঙ্গে একাকার।এছাড়াও তুলসী খেত মোড় থেকে গোয়ালপাড়া রাস্তার ধার ভেঙ্গে ঝুকিতে পড়ে আছে।

কার্পেটিং রাস্তা করতে হলে আগে হেয়ারিং বন্ড বা এইচবিবি করে রাখতে হয় কয়েক বছর, তারপর হয় কার্পেটিং। এসব রাস্তা করা মানে সরকারের টাকা পানিতে ফেলা। গতবার মাটি দিয়ে উঁচু করা হল, সেই মাটির উপর করা হচ্ছে কারৃপেটিং রাস্তা। রাস্তা নির্মানের এক দু মাসের মধ্যেই ভেঙ্গে পিচ খোয়া উঠে একাকার হয়ে পড়বে। কারন বাঁধের শতশত গাছ কাটা হয়েছে নির্বিচারে। অপ্রয়োজনীয় রাস্তায় কোটি টাকা জলে পড়া ছাড়া কিছুই না।

ঘাষিগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম বাবলুর ব্যক্তিগত ০১৭১১-০১৩৮৮৪ মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেন নি। তবে তার পার্টনার ভূলু জানান, রাস্তার কাজটি পেয়েছিল শহরের ঠিকাদার রায়হান। সে সিডিউল অনুযায়ী কাজ করলে ৮ লাখ টাকা লোকসান হবে, এজন্য সে কাজ করেননি। এমপি ও এলজিইডির অনুরোধে চেয়ারম্যান ও আমি কাজটি করছি।


প্রসঙ্গনিউজবিডি/জে.সি